গামছা বিক্রেতার ছেলে কিভাবে হাজার কোটি টাকার মালিক?

1 min read

নিউজ ডেস্ক: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরভদ্রাশন গ্রামে ছোটবেলা কেটেছে যে ছেলেটির। তার বেড়ে ওঠা, কৈশোর থেকে তারুণ্য শুরু পটুয়াখালীর মাটিতে। যে মাটিতে বেড়ে উঠেছেন, সেই মাটির সঙ্গে, সেই মাটির মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে ছোট্ট সেই কিশোর আজ হাজার কোটি টাকার মালিক। অভাবগ্রস্থ পরিবারের বাবা ছিলেন গামছা ফেরিওয়ালা, তার ছেলে আজ চড়ে কোটি টাকার গাড়িতে।

এতোক্ষণ বলছি, মুখোশধারী চেতনাবাজ ও বারবার দল পাল্টানো সাবেক এক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনির কথা। যিনি ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর দলের শক্তি ও নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দুর্নীতির মাধ্যমে রাতারাতি হয়েছেন কোটিপতি। তবে বিষয়টি সরকারের নজরে আসার পরই আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যান এই পল্টিবাজ সুশীল।

গোলাম মাওলা রনির সম্পত্তি অল্প সময়ে দাঁড়িয়েছে হাজার কোটি টাকায়। গড়েছেন শিল্প-কারখানা। রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট, গাড়ি-বাড়ি। কিন্তু তার বাবা শামসুদ্দীন মুন্সী সংসার চালাতেন গামছা ফেরি করে বিক্রির মাধ্যমে। রনির টাকা যেভাবে বাড়ছিল তা দেখে এলাকার মানুষ বলতো- রনি একখান যাদুর চেরাগ পাইছে। এক সময় ভাতের মাড় খেয়ে বেড়ে ওঠা রনির পরিবার এখন পটুয়াখালী জেলার সবচেয়ে বড় সম্পদশালী পরিবার।

আওয়ামী লীগের শক্তি খাটিয়ে এমপি হওয়ার পর হীন কোন অপকর্ম নেই যা করেননি গোলাম মাওলা রনি ও তার কথিত ‘ভাইয়া বাহিনী’র সদস্যরা। পটুয়াখালী জেলা এলজিইডি, সওজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ, বদলি এবং টেন্ডারবাজিতে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন রনি। নিয়োগ বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, ভূমি দখল করে রাতারাতি টাকার পাহাড় গড়েন রনি ও তার কাছের লোকজন।

তবে নিজের অপরাধের জের ধরে এক সময় ধূর্ত রনি বুঝতে পারেন আওয়ামী লীগ তাকে দলে রাখবে না। তখন শিপিং ও টেক্সটাইল ব্যবসায় হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে- ‘সেবোল্ট গার্মেন্ট লিমিটেড’ মেসার্স সেবোল্ট এক্সপ্রেস, মেসার্স সেবোল্ট অ্যাডজাস্টস, নেট অ্যাকসেস, নন্দিতা এন্টারপ্রাইজ, ইন্টারন্যাশনাল মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড অ্যাডভারটাইজিংসহ আরো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

এছাড়া ধানমণ্ডির ৬/বি, নাইম রোডে এবং তোপখানা রোডে রয়েছে তার বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, পূর্বাচলে প্লটসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট, বাড়ি এবং প্লট রয়েছে। ল্যান্ডক্রুজার প্রাডোসহ রয়েছে একাধিক গাড়ি।

আওয়ামী লীগ থেকে বেরিয়ে যোগ দেন নিজের পুরোনো ঠিকানা যুদ্ধাপরাধী ও দেশবিরোধী শক্তির দলে। বিএনপি-জামায়াতের গুণগান গেয়ে আর সরকারের নামে মিথ্যার বেসাতি সাজিয়ে নিজের ফেসবুকে গলাবাজি করে এখন দিন কাটছে তার। মিথ্যাবাদী-প্রতারক ও ধূর্ত রনির মিষ্টি কথায় ভুলবেন না।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours