পলাশীর মীর জাফর বনাম ২০০৪ সালের মীর জাফর

1 min read

নিউজ ডেস্ক: মীর জাফরের ইতিহাস সবারই জানা। এই নামটি আজ গালিতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বাসঘাতক চরিত্র বুঝাতে এখন আমরা কাউকে মীর জাফর বলে থাকি। রাষ্ট্রবিরোধী মানুষ এ মাটিতে ২’শ বছর আগেও ছিলো। আমরা এ মাটিতে মীর জাফর পেয়েছিলাম। সেই পুরনো মীর জাফরের দেখা নতুন করে আবার মেলে ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টে।

মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তস্রোতের সেই ভয়ঙ্কর-বিভীষিকাময় রক্তাক্ত ২১ আগস্ট। বারুদ আর রক্তমাখা বীভৎস রাজনৈতিক হত্যাযজ্ঞের দিন। মৃত্যু-ধ্বংস-রক্তস্রোতের নারকীয় গ্রেনেড হামলার আঠারো বছর।

সভ্যজগতের অকল্পনীয় এক নারকীয় হত্যাকান্ড চালানো হয় ২০০৪ সালের সেই দিনে। গ্রেনেডের হিংস্র দানবীয় সন্ত্রাস আক্রান্ত করে মানবতাকে। রক্ত-ঝড়ের প্রচন্ডতায় মলিন হয়ে গিয়েছিল বাংলা ও বাঙালীর মুখ। জীবন্ত বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ এদিন মুহূর্তেই পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে।

মূলত তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে শেষ করে ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে মরণঘাতী আঘাত হানে বিএনপি-জামায়াত সরকার। আর রাজনৈতিক লাভের আশায় ঘটনার বিষয়ে আঁচ পেয়েও নীরবতা পালন করেন বেগম জিয়া। বিরোধী দলীয় নেত্রীর উপর তারেক রহমানের মদদে হামলার ঘটনায় বিএনপি রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের পরিচয় দিয়েছে। পরবর্তীতে এই উচ্চাকাঙ্খা বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক এক অধ্যাপক বলেন, বিএনপির যতোগুলো রাজনৈতিক ভুল ছিল তার মধ্যে অন্যতম হলো ২১শে আগস্ট হামলার ষড়যন্ত্র। বিরোধী দলকে নেতৃত্বশূন্য করে ক্ষমতা দখলে রেখে ইচ্ছামতো দেশ পরিচালনার এই ষড়যন্ত্র বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার হামলার ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সাজানো হয় জজ মিয়া নাটক। গ্রেনেড হামলায় পৃষ্ঠপোষকতা করা নিঃসন্দেহে বিএনপির রাজনৈতিক উচ্চভিলাসের অংশ। আর অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের কারণে ভুগতে হচ্ছে বিএনপিকে। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে জিয়ার পথ ধরে বিরোধী দল দমনে বেগম জিয়া-তারেকের ঘৃণ্য এই কৌশলই বিএনপিকে জনবিচ্ছিন্ন করেছে।

তিনি আরো বলেন, তারেক রহমানের ষড়যন্ত্রের বিষয়ে জানতে পেরেও ক্ষমতা ধরে রাখতে বাংলাদেশকে বিরোধী দলহীন রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রে পরোক্ষভাবে সামিল হন বেগম জিয়া। ২১শে হামলা ও হত্যার ঘটনায় নীরবতা পালন করে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি নেত্রী। ২১শে আগস্ট হামলায় আওয়ামী লীগের ২৪জন নেতা-কর্মী শহীদ হলেও বড় ক্ষতি হয়েছে বিএনপির। এই হামলার সাথে সম্পৃক্ত থাকায় বিএনপি দেশবাসীর কাছে জঙ্গি-সন্ত্রাসের তকমা পেয়েছে। ফলে রাজনীতিতে জনসমর্থনহীন দলে পরিণত হয়েছে বিএনপি। পাপের ফল পেয়েছে বিএনপি।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours