বাংলাদেশকে ব্যর্থ করতেই শেখ হাসিনা’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র: শেখ পরশ

1 min read

যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ‘আজকে ওরা হত্যা, খুন-গুমের কথা বলে, আওয়ামী লীগ ২১ বছর সব ধরণের নির্যাতন সহ্য করেছে। হত্যার শিকার হয়েছে, বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে পুড়ানো হয়েছে, জেল-জুলুম ইত্যাদি। ২১ বছর পর, ১৯৯৬-তে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পেয়ে বিজয় মিছিলও করে নাই- যাতে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। এই সংযমের প্রতিদান কি পেলাম? ৩০ হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী সমর্থকদের হত্যা করেছিল ওরা ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নারী শিশু নির্যাতন করেছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আদলে।’

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় কালাচাঁদপুর সরকারি স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে ১৮ সম্বর ওয়ার্ড (গুলশান-২, বারিধারা আ/এ সংলগ্ন) পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে আয়োজিত ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’র ঈদ উপহার বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ঈদ উপহার বিতরণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। ঈদ উপহার বিতরণ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকির হোসেন বাবুল এবং সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের আমলে প্রতি রাতে মানুষকে বিনা বিচারে ফাঁসি দেয়া হত। এভাবে আড়াই হাজার সেনা কর্মকর্তাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল। আজকে তারা আইন-শৃঙ্খলা এবং হত্যা-গুমের কথা বিদেশিদের কাছে নালিস করে। আজকে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীদের হাতে গঠিত সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গণতন্ত্র চাচ্ছে। যাদের জন্মের মধ্যেই গণতন্ত্র নাই, তারা গণতন্ত্রের কথা বলছে। একদিকে গণতন্ত্রের কথা বলছে, অন্যদিকে সাংবাদিকদের গায়ে হাত দিচ্ছে, পুলিশেল উপর চড়াও হচ্ছে। কিছুদিন আগেও শাহআলী এবং রূপনগর থানায় বিএনপির প্রোগ্রামে আমাদের সাংবাদিক ভাইদের গায়ে হাত দিয়েছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। সেই পুরানো চেহারা উন্মোচিত হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই।’

তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে যেই বিএনপি আমাদের সাংবাদিক ভাইদের নির্যাতন করেছিল, এরা সেই বিএনপি ভুলে গেলে চলবে না। এটাও ভুলে গেলে চলবে না, যে ওদের জন্মই হয়েছে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার মাধ্যমে। একজন স্বৈরশাসকের পকেট থেকে তাদের দলের সৃষ্টি, তারা কি সেটা ভুলে গেছে? তারা নাকি গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিবে। গণতন্ত্রের জন্য নাকি তারা সংগ্রাম করছে! তাদের জন্মটা কোথায় এবং কিভাবে হয়েছে? তারা কি ভুলে গেছে নিশ্চয়ই? প্রথমে রাজনীতিবিদদের গালি দিয়ে মিলিটারি লেবাস পরে ক্ষমতা দখল এবং তার পর লেবাস খুলে নিজেই রাজনীতিতে নামা। রাজনৈতিক দলের কিছু উচ্ছিষ্টদের নিয়ে দল গঠন করা। এইতো বিএনপি আজকে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র করতে বিদেশীদের কাছৈ নালিশ করছে বিএনপি। শেখ হাসিনাকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে।’

যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশকে ব্যর্থ করতেই শেখ হাসিনা’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। শেখ হাসিনার মূল শক্তি এদেশের জনগণ ও তাদের ভালবাসা।’

তিনি যুবলীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক কাজ। আপনারা যদি যুবলীগ করতে চান তাহলে পরিচ্ছন্ন রাজনীতি করতে হবে। জনগণের পাশে থাকতে হবে। শেখ হাসিনা যেই রাজনৈতিক মানদ- স্থাপন করেছেন সেটা অনুসরণ করতে হবে। সততা এবং নিষ্ঠার সাথে গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যেতে হবে। আমাদের আগামীতে এই দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কোন জনবিচ্ছিন্ন সুশীলদের পূর্ব-নির্ধারিত সুশাসনের সংজ্ঞা দ্বারা আমাদের পরিচালিত হতে হবে না। আমাদের সুশাসনের সংজ্ঞা জননেত্রী শেখ হাসিনা রচিত করেছেন ইতিমধ্যে সেটা হচ্ছে মানবিকতা, ন্যায়পরায়ণতা ও স্বচ্ছতা।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত সরকার এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল, আর শেখ হাসিনার সরকার জঙ্গিবাদ এদেশে থেকে নির্মূল করে দিয়েছে। বিচার বিভাগকে স্বাধীন করে দিয়েছে, তাই এমপি-মন্ত্রী বলেন, আর প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন কাউকেই ছাড় দেয়া হচ্ছে না, সাজা হচ্ছে। অনেক সরকার দেখেছি কিন্তু, এই সততা ও ন্যায়পরায়ণতা আর কোন সরকার দেখাতে পারে নাই এই ৫০ বছরে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার খুলে পড়ে দেখুন, আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি এমন কোন প্রতিশ্রুতি নাই, যেটা শেখ হাসিনা সরকার পূরণ করেন নাই।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ‘আমরা যখন মানুষের সেবা করছি তখন দেশবিরোধী শক্তি, জনগণের অর্থ লুণ্ঠনকারী দল জামাত-বিএনপি আবারও দেশকে গভীর ষড়যন্ত্র করছে, বিদেশি প্রভুদের কাছে নালিশ করছে। বিদেশি প্রভুদেরকে নিয়ে নামি-দামি হোটেলে ইফতার পার্টি করে চলেছে।’

তিনি বলেন, ‘এই জামাত-বিএনপি ১৯৭১ সালে মানুষের হত্যা করছে আমাদের ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, ২০০১-২০০৬ সালেও একই কায়দায় জ্বালাও-পোড়াও করেছে এদেশের সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, গুম, খুন করেছে। ২০১৩-২০১৪ সালেও সারাদেশে অবরোধ দিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস করে হাজার হাজার যানবাহন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে ১৬৫ জন জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে সেই একই চেহারার আভাস পাচ্ছি ২০২৩ সালে এসেও। বিভিন্ন মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে সেখানেও এই বিএনপি-জামায়াতের হাত রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোন বিদেশি প্রভু দিয়ে ক্ষমতার বদল হবে না। কে ক্ষমতায় থাকবে না থাকবে তা নির্ধারণ করবে এদেশের জনগণ। আর এদেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পাশে রয়েছে।’

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours