ভোটের কার্যক্রম আরও জোরালো করবে আওয়ামী লীগ

1 min read

পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে নানা প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলা এবং অপপ্রচারের জবাব ও উন্নয়ন প্রচারে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। ঈদের পর ভোটের প্রস্তুতি আরও জোরালো করে মাঠ দখলে রাখবে ক্ষমতাসীনরা। পরিকল্পনা সাজাতে জেলা, উপজেলা ও মহানগরের নেতাদের নিয়ে বৈঠকও শুরু করেছেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের সাংগঠনিক কাজ চলমান আছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। আমাদের সাংগঠনিক কাজ এখনো আছে, ঈদের পরেও থাকবে। বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা তাদের দলের বিষয়। অনেকদিন ধরে শুনছি তারা আন্দোলন জোরদার করছে। আমরাও চাই-একটা শক্তিশালী বিরোধী রাজনৈতিক শুভশক্তির উত্থান হোক। কিন্তু কোনো অশুভ কর্মকাণ্ড বা নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কেউ যেন তৈরি না করে সেই আাহ্বানও আমরা করব।

আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি : জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলনে আছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে তা আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে উচ্চ আদালতের রায়ে বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয়, এ ইস্যুতে আলোচনা করতেও রাজি নয় দলটি। তাদের মতে, নির্বাচনের সময় নির্বাচিত সরকার অর্থাৎ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারই দায়িত্বে থাকবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। এই অবস্থান নিয়েই আওয়ামী লীগ নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে।

তিন মেয়াদে টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ। আগামী নির্বাচনেও জয় পেতে আগেভাগেই মাঠ গোছানো শুরু করেছে দলটি। এত লম্বা সময় ক্ষমতায় থাকায় তৃণমূলে বেড়েছে দ্বন্দ্ব। তা নিরসনে এবার সরাসরি পদক্ষেপ নিচ্ছেন দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে জেলা, উপজেলা ও মহানগরের নেতাদের গণভবনে ডেকে কথা বলছেন তিনি। এছাড়া বেশ কয়েকটি জেলায় জনসভা করেছেন। দলীয় প্রার্থী বাছাই, জোটের মেরুকরণ মেলানো, ইশতেহার তৈরি, সদস্য সংগ্রহসহ অন্যান্য কাজও শুরু করেছে। ঈদের পর এসব কর্মসূচিতে গতি বাড়াবে দলটি।

জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। দলীয় মনোনয়ন ফরম বিক্রির পর দলীয় প্রার্থীও চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। পাঁচ সিটির মধ্যে-গাজীপুর ও বরিশালে প্রার্থী পরিবর্তন করেছে দলটি। সিলেটে দিয়েছে নতুন মুখ। আর রাজশাহী ও খুলনায় বর্তমান মেয়রদেরই আবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে আগে বড় শহরগুলোর এই ভোটে সব মনোনয়নপ্রত্যাশী এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নৌকার পক্ষে মাঠে নামানোই চ্যালেঞ্জ আওয়ামী লীগের। এ নিয়ে কাজও শুরু করেছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা। ইতোমধ্যে তারা নির্বাচনি এলাকায় গিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন।

ঈদকে সামনে রেখে ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলীয় নেতাদের সঙ্গে ভিডিওকলে যুক্ত হয়ে বুধবার শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঈদের ছুটিতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে জনসংযোগ করার পাশাপাশি সরকারি প্রকল্পের উপকারভোগীদের খোঁজখবর নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি। এ সময় শেখ হাসিনা তাদের গ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে যেতে বলেছেন। একই সঙ্গে বিএনপির আমলের অপশাসন দুর্নীতি চিত্র এবং পার্থক্য মানুষের সামনে তুলে ধরার কথা বলেন। দলীয় সংসদ-সদস্যদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এলাকায় কোনো দলাদলি করা যাবে না। মনোনয়ন দেব আমি। যারা মনোনয়ন পেতে আগ্রহী, সবাই এলাকায় একসঙ্গে কাজ করবে। কোনো ধরনের দ্বন্দ্বে লিপ্ত হওয়া যাবে না।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন বলেন, গণতন্ত্রের মানবকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার নেতাকর্মীদের বেশ কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা কর্মী হিসাবে তার নির্দেশনা পালন করলে শুধু সিটি নির্বাচন নয়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সব অপশক্তিকে মোকাবিলা করতে পারব।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours