এখন জামায়াতে ইসলামও চায় ভাষা দিবস পালন করতে

1 min read

নিউজ ডেস্ক : দেশ স্বাধীন হবার আগ পর্যন্ত বাঙালি হয়েও পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছিলো একদল ষড়যন্ত্রকারী। যাদের আমরা জামায়াতে ইসলাম নামে চিনি। ৭৫ এরপর যে শক্তি ফের চেয়েছিলো, দেশকে পাকিস্তানের হাতে তুলে দিতে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর নিজেদের নীল নকশা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়ে এবার ভিন্নপন্থা অবলম্বন শুরু করেছে রাজাকার বাহিনী জামায়াতে ইসলাম। ২১ ফেব্রুয়ারিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস’ হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। এমনকি এ বিষয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি বিবৃতিও দিয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিপর্যয় কাটিয়ে সরকারের সুদৃষ্টি ফেরাতেই দলটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির মকবুল আহমাদের বিবৃতিতে দলটির প্রচার সম্পাদক এম. আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে, ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস’। ২১ ফেব্রুয়ারির ভাষা শহীদদের রক্ত এবং ত্যাগের বিনিময়ে বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা লাভ করেছে। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য যারা শহীদ হয়েছেন জাতি তাদের চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আমি ভাষা আন্দোলনের মহান শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি এবং তাদের মাগফিরাতের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করছি।

তিনি বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করে বলেছেন, বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে যথাযোগ্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করে বিজাতীয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে বাংলা ভাষাকে হেফাজত করতে হবে। তাহলেই ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্বপ্ন সার্থক হবে। ২১ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও মহান শহীদ দিবস’ যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য আমি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখা ও দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

জামায়াতের এমন ইতিবাচক মনোভাব প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুভাষ সিংহ রায় বলেন, ২০ দলীয় জোটের শরিক দল হিসেবে জামায়াত অবশেষে বুঝতে সক্ষম হয়েছে যে, বিএনপি জামায়াতকে বরাবরই রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। অন্যদিকে বিএনপির স্বার্থ রক্ষায় জামায়াতের গায়ে যেসব দাগ পড়েছে তা থেকে উত্তরণ ছাড়া জামায়াতের আর কোন পথ খোলা নেই, তাও বোধগম্য হয়েছে দলটির। ফলে স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে খেতাব পাওয়া জামায়াত ক্ষমতাসীনদের সুদৃষ্টি পেতে এবং বিএনপির বাইরে এসে নতুন করে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তৈরিতে বিরোধী মনোভাবগুলো ঠেলে ইতিবাচক রাজনীতির চর্চা শুরু করতে চাইছে। আমার কাছে এটি রাজনৈতিক কৌশল মনে হচ্ছে। জামায়াত দল হিসেবে ইতিবাচক মনোভাব ধরে রাখতে পারে কিনা- এখন এটিই দেখার বিষয়।

প্রসঙ্গত, জামায়াত আমির এমন এক সময় এই আহ্বান জানালেন, যখন দলটি চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শীর্ষ নেতাদের ভূমিকা নিয়ে বর্তমানে দলটির মধ্যে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। এই ইস্যুতে ইতোমধ্যে পদত্যাগ করেছেন দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকসহ বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা। এছাড়া এই ইস্যুতে ভিন্নমত প্রকাশ ও সমালোচনায় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য মুজিবুর রহমান মঞ্জু।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours