বাসায় ফিরে চুপিসারে নেতাকর্মীর সঙ্গে বৈঠকে খালেদা জিয়া

1 min read

নিউজ ডেস্ক: প্রমাণিত দুর্নীতি মামলায় ২৫ মাস কারান্তরীণ থাকার পর সরকারের মহানুভবতায় দেড় বছরের বেশি সময় যাবৎ মুক্ত আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন না এ মর্মে পরিবারের পক্ষ থেকে তখন জানানো হলেও পরে বিএনপি নেত্রী কথা রাখেননি। সৌজন্য সাক্ষাতের নামে করেছেন রাজনৈতিক আলোচনা। তবে সবাইকে নয়, শুধুমাত্র পছন্দের মানুষগুলোকে নিয়ে। ব্যত্যয় হয়নি এবারও।

সম্প্রতি গুঞ্জন উঠেছে, তিনি কাউকে কিছু না জানিয়ে নীরবে-চুপিসারে দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার রূপরেখা এঁকেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে খালেদার হয়ে দলীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুখ খোলেননি। কেবলমাত্র বলেছেন, ধৈর্য ধরুন, ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয়।

দায়িত্বশীল একটি সূত্রের তথ্যমতে, রাজনীতির দৃশ্যমান মাঠে না থাকলেও ‘ডুবে ডুবে জল খাওয়া’র মত করে তলে তলে ঠিকই আগামী দিনে দলের নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক রূপরেখায় নতুনত্ব আনতে যাবতীয় বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। পাশাপাশি নিভৃতে বিএনপির নেতৃত্বে তার রাজনৈতিক উত্তরসূরির জন্য ‘উর্বর মাঠ’ প্রস্তুতের কাজ করছেন। আর এসব বিষয়ে তিনি শুধুমাত্র মির্জা ফখরুলের সঙ্গে শলাপরামর্শ করছেন বলে দলের অভ্যন্তরে গুঞ্জন উঠেছে। একটি পক্ষের দাবি, ম্যাডাম (খালেদা) এ বিষয়ে ঘনিষ্ঠ নেতাদের কানে কৌশলে প্রাথমিক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। অথচ তাদেরকে কিছুই জানানো হচ্ছে না। তাহলে কী তারা কেউই নন! মির্জা ফখরুলই সব!

অপরদিকে আরেকটি পক্ষ বলছে, দলীয় নেত্রী তার দূরদর্শী ভাবনা থেকেই বিএনপির জন্য যা মঙ্গলকর, তাই-ই করছেন। এটা নিয়ে ঘটা করে সবাইকে বলার কি আছে!তিনি যাকে বা যাদের বিশ্বাস করেন, তার কিংবা তাদের সঙ্গেই সব শেয়ার করছেন। আলাপ করছেন। এ নিয়ে দলাদলি বা ব্যাকবাইটিং না করে বরং এখন উচিত হবে দলের মঙ্গলে যা করণীয়, তাই করা।

ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, ২৮ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে বাসায় আসার পর থেকে রাজধানীর গুলশানে নিজের বাসা ‘ফিরোজা’য় ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন খালেদা জিয়া। আগের মতো দৃশ্যমান ব্যস্ততা না থাকলেও ঠিকই তিনি মধ্যরাত অবধি পছন্দের মানুষের সঙ্গে বৈঠক করছেন। এতে অন্যান্য নেতারা বিরাগভাজন হচ্ছেন। আর এটাই স্বাভাবিক। কারণ, নেত্রীর সান্নিধ্য কে না চায়! তারা ভাবছেন, হয়তো নিজেদের অবস্থান হারাবেন এবার। যার কারণে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য জানান, খালেদা জিয়া নিজের বয়সের কথা ভেবে দলের আগামী দিনের রাজনীতি এবং বিএনপির নেতৃত্বে তার জ্যেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমানের অবস্থান পাকাপোক্ত করার বিষয় নিয়ে ভাবছেন। ইতোমধ্যে অনেকদূর অগ্রসরও হয়েছেন। তবে এতে কপাল পুড়বে অনেকের, হারাতে পারেন পদ-পদবিও। এখন বাকীটা সময়ের অপেক্ষা মাত্র।

এ বিষয়ে দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়া নিজেকে গভীর জলের মাছ মনে করলেও তার এই ভাবনাকে মিথ্যে প্রমাণ করে দেন আশেপাশের কতিপয় নেতারা। যাদেরকে তিনি বিশ্বাস করে মনের কথাগুলো বলেন, পরে তারাই আবার সেগুলো সহাস্যে প্রচার করে বেড়ায়। দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়টিও তেমন। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, বিএনপির অভ্যন্তরে মীরজাফরের অভাব নেই।

+ There are no comments

Add yours