জিয়াকে দাফন করে জাতীয় বীর বানানোর প্রয়োজন নেই: কর্নেল মতিউর

1 min read

নিউজ ডেস্ক: জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন মেজর মোজাফফর। ১৯৯৪ সালে প্রোবের সম্পাদক ইরতিজা নাসিম আলীর ‘রহস্যাবৃত জিয়া হত্যাকাণ্ড’ শিরোনামে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে মেজর মোজাফফরের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছিল। সেই সাক্ষাৎকারে মেজর মোজাফফর বলেছিলেন, কর্ণেল মতিউর স্পষ্ট করেই বলেছিলেন, জিয়াকে দাফন করে জাতীয় বীর বানানোর প্রয়োজন নেই।

এদিকে জিয়ার লাশ নিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো অপচেষ্ঠা করছেন বিএনপি। জিয়াউর রহমানের লাশ নাকি জেনারেল এরশাদ কাঁধে বহন করেছেন- একথা বিএনপি বললেও এরশাদ কখনো বলেননি- ভেতরে জিয়ার লাশ আছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, চন্দ্রিমা উদ্যানে স্বামী ভেবে যার কবরে ফুল দিচ্ছেন খালেদা জিয়া তিনি আসলে তার স্বামী জিয়াউর রহমান নন। তাহলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ভেবে যাকে শ্রদ্ধা জানাতে চন্দ্রিমা ছুঠে যান দলটির নেতাকর্মীরা তার মরদেহটি আসলে কোথায়?

সেই উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউজে প্রেসিডেন্ট জিয়াকে হত্যার জন্য যে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছিল এর পর অনেকেরই চেহারা দেখে চেনার উপায় ছিল না- কোনটা কার লাশ। এর মধ্যে ছিল জিয়াউর রহমানের লাশটিও।

জিয়া হত্যার মিশনে অংশ নেওয়া জেষ্ঠ কর্তা কর্ণেল মতিউরের নির্দেশ ছিলো- রাতেই নিহত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরদেহ রাঙ্গামাটির কাছে কোন পাহাড়ের নিচে ফেলে দিতে হবে যাতে কেউ খোঁজে না পায়। তবে অনেক সূত্রে এমন তথ্যও পাওয়া যায় যে, তিনি জিয়ার লাশ পুড়িয়ে ফেলতে বলেছিলেন।

১৯৮১ সালের ৩০শে মে সকালে সার্কিট হাউজে গিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর তৎকালীন মেজর রেজাউল করিম রেজা। জানা যায়, তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সার্কিট হাউজে পাঠানো হয়েছিল সেখানে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে থাকা সৈন্যদের নিরাপদে সরিয়ে নেবার জন্য।

গণমাধম্যে মেজর রেজাউল করিম রেজার দেওয়া এক সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, কর্নেল মতিউর রহমান তাকে ডেকে বলেন, জিয়াউর রহমানের ডেড বডিটা কিছু ট্রুপস সাথে নিয়ে সার্কিট হাউজ থেকে নিয়ে পাহাড়ের ভেতরে কোথাও কবর দিয়ে দাও। যেন কেউ লোকেট করতে না পারে। আমরা চাই না সে জাতীয় বীর হোক।

মেজর রেজাউল করিম রেজা রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে এই দায়িত্ব পরে মেজর শওকত আলী ও মেজর মোজাফফরের উপর।

পরে ১৯৯৪ সালে প্রোবের সম্পাদক ইরতিজা নাসিম আলীর ‘রহস্যাবৃত জিয়া হত্যাকাণ্ড’ শিরোনামে ধারাবাহিক প্রতিবেদনে মেজর মোজাফফরের দেওয়া বক্তব্য থেকে জানা যায়, কয়েকজন সৈনিকের সহায়তায় ৩টি মরদেহ চাদর দিয়ে জড়িয়ে দোতলা থেকে ধরাধরি করে লাশগুলো নিচে নামিয়ে সৈনিকরা তুলে নেয় পিকআপে। সার্কিট হাউস থেকে বেড়িয়ে জিপ আর পিকআপ রাঙ্গুনিয়ার পাথরঘাটা খেঁজুর বাগান এলাকায় পৌঁছানোর পর মেজর মোজাফফর সিাদ্ধান্ত নেন এখানেই দাফন করবেন। পরে ইমামসহ স্থানীয় লোকজন ৩টি মরদেহের গোসল শেষ করলেন। বুলেটে ঝাঁজরা লাশগুলি দেখে কেউ চিনতেও পরালেন না কোনটি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের। বড় করে খোড়া একটি কবরের মধ্যেই ৩ জনকে দাফন করা হয় এক সঙ্গে। অনেকটা গণ কবরের মত করে। তিন জনের মধ্যে জিয়া ছিল কি না তা নিয়ে সন্দেহ ছিল মেজর মোজাফফরেরও।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours