বাংলাদেশে গুমের রাজনীতি শুরু হয় স্বৈরাচার জিয়ার আমলে!

1 min read

ডেস্ক রিপোর্ট: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বাংলাদেশকে পাকিস্তানী ভাবধারায় ফেরাতে শুরু করেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। মহান স্বাধীনতার সব মূলনীতি ভূ-লুণ্ঠিত করে দেশে মৌলবাদী, রাজাকার, আল-বদরদের পুনর্বাসন থেকে শুরু করে দেশপ্রেমিক হাজার হাজার সেনা কর্মকর্তাকে বিনা বিচারে ফাঁসি দেন এই কুখ্যাত স্বৈরশাসক। সংবিধান লঙ্ঘন করে একইসাথে সেনাপ্রধান এবং সরকারপ্রধান হয়েও স্বৈরাচার জিয়ার স্বাদ মেটেনি। রাজনৈতিক দল বিএনপি গঠন করে বিরোধী দলের নেতাদের গুম শুরু করেন। শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকতে মানবতাবিরোধী এই কাজ শুরু করেন জিয়াউর রহমান। তার হাত ধরেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই নোংরা কর্মকাণ্ডের শুরু হয়। এরপর স্বৈরাচার এরশাদ এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আমলেও এই ধারা অব্যাহত থাকে।

জিয়ার শাসনামলের বিভিন্ন তথ্য ঘেঁটে দেখা গেছে, ক্ষমতায় থাকার জন্য জিয়াউর রহমান সেনাসদস্যসহ হাজারো মানুষকে হত্যা করেছেন। এমনকি কারাগার থেকে ধরে নিয়ে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের আমলে বিরোধীদলের কর্মীদের ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করা হত। একাজে বিশেষ বাহিনী ব্যবহার করতেন জেনারেল জিয়া। যাকেই তার ক্ষমতার পথে বাধা মনে হত তাকেই রাতের আধারে গুম করে ফেলা হত।

জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু হত্যায় ওতপ্রোতভাবে জড়িত জিয়া ক্ষমতা দখলের পর বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ করায় তৎকালীন ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ বাবু, চট্টগ্রামের মৌলভী সৈয়দকে গুম করে ফেলেন। তাদের লাশ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

জিয়ার হাত ধরে খালেদা জিয়াও গুম খুনের রাজনীতি শুরু করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সন্ত্রাস দমনের নামে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীদের গুম-খুন শুরু করেন খালেদা জিয়া। ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’ নাম দিয়ে মূলত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়। শুধু তাই নয় ২০০৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে যৌথ অভিযান দায়মুক্তি আইন পাস করে বিএনপি সরকার। ওই আইনে বলা হয়, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান, সন্ত্রাস দমন এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের মাধ্যমে শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করার জন্য ২০০২ সালের অক্টোবরে প্রতিরক্ষা বাহিনী, তৎকালীন বিডিআর, পুলিশ, আনসার ও বেসামরিক প্রশাসনের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী গঠিত হয়। ওই যৌথ বাহিনীর সদস্যদের সব ধরনের কর্মকাণ্ড (২০০২ সালের ১৬ অক্টোবর থেকে ২০০৩ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত) দায়মুক্ত করার জন্য আইনটি প্রণীত হয়েছে।

২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের ‘অপারেশন ক্লিন হার্ট’ নামের যৌথ অভিযানকে দায়মুক্তি দিয়ে করা আইনকে অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। রায়ে ওই আইনকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক উল্লেখ করে আদালত বলেন, জাতীয় সংসদকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন সংবিধানের চেতনা পরিপন্থী এ ধরনের আইন প্রণীত না হয়ে যায়। ইচ্ছাধীন হত্যাকে দায়মুক্তি দিতে সংসদ কোনো আইন প্রণয়ন করতে পারে না। আইনটি জন্মগতভাবে মৃত এবং এর কোনো আইনগত অস্তিত্ব নেই।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছে অবৈধভাবে। স্বৈরাচারের হাতে গঠিত এই দল দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে। স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের মতই খালেদা জিয়াও হাজার হাজার রাজনৈতিক কর্মী গুম করেছেন। সুতরাং বিএনপির নেতাদের মুখে গুম-খুনের কথা মানায় না।

 

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours