সংস্কৃতি চর্চা বাড়ালে জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব

1 min read

নিউজ ডেস্ক: সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ না থাকায় তরুণরা ধর্মীয় উগ্রবাদ বা জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে। এ জন্য সারাদেশে সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ আরো বাড়াতে হবে এবং সবাইকে সংস্কৃতিতে যুক্ত করতে হবে। তাহলে জঙ্গিবাদ দেশ থেকে নির্মূল সম্ভব।

বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে ‘উগ্রবাদ দমনে সম্মানিত সংস্কৃতি কর্মীদের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালায়’সংস্কৃতিকর্মীরা এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, আছাদুজ্জামান নূর এমপি, সিটিটিসির প্রধান মনিরুল ইসলামসহ টেলিভিশন, চলচ্চিত্র, মঞ্চ ও সঙ্গীত জগতের শিল্পীরা।

কর্মশালায় আছাদুজ্জামান নূর বলেন, ধর্ম চর্চা আমাদের দেশে বহু বছর ধরে চলে আসছে। আমি যে গ্রামে বড় হয়েছি সেখানে দুই ধর্মের লোক ছিলেন; মুসলমান ও হিন্দু। আমাদের মধ্যে সহমর্মিতা ছিল। তখন মসজিদ ছিল একটা দুইটা। কিন্তু এখন পাড়ায় মহল্লায় কয়েকটি মসজিদ। দেখা গেলো ১০ পরিবার এক মসজিদে নামাজ পড়তো। কোনো বিবেধ থেকে তারা মসজিদ আলাদা করে ফেলেন। ফলে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্কগুলো কমছে।

তিনি বলেন, এখন অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সংস্কৃতি শিক্ষা যেমন নাচ গান চিত্রাঙ্কন শিখতে দেন না। তারা চান তাদের সন্তান জিপিএ-৫ পাক। কিন্তু নাচ, গানে তো পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। এ প্লাস পাওয়ার জন্য মার্কও আসে না। এজন্য তারা আগ্রহ দেখান না। আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংস্কৃতি শিক্ষার ব্যবস্থা করতে চেয়েছিলাম। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও আন্তরিক ছিল। কিন্তু বাজেটের কারণে এটি আর হয়ে ওঠেনি।

নাট্য ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, জঙ্গি নির্মূল করতে হবে সামাজিকভাবে। এর মধ্যে পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা বেশি। সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, আমরা আমাদের সন্তানদের মুক্তিযোদ্ধের গল্প বলি না। সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে স্কুলের পাঠ্যসূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এসব কারণে উগ্র সাম্প্রদায়িকতা আমাদের উপর ভর করেছে।

নাট্য অভিনেতা জাহিদ হাসান বলেন, যারা ইসলাম ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ করেন তাদের আলোচনা আরো গঠনমূলক হতে হবে। তারা বিদ্বেষী আচরণ করেন। যেমর আমি একটি সিনেমা করেছিলাম। এটি এখনো মুক্তি পায়নি। কিন্ত ওয়াজে এক বক্তা বললেন আমি দাঁড়ি রেখে পাগড়ি পরে ইসলাম ধর্মের অবমাননা করছি। তারা মানুষকে এভাবে মৌলবাদের দিকে প্রভাবিত করছে। অথচ ওই ছবিতে আমি পাগড়ি পরিনি।

অভিনেতা মোশারফ করিম বলেন, আমার শুরু থিয়েটার থেকে। একসময় অনেক তেলাপোকা, পোকা মাকড় মেরেছি। এখন চিন্তা করি এগুলোর তো প্রাণ আছে। এই বোধ জন্ম দিয়েছে থিয়েটার। তাই যদি সবাইকে সংস্কৃতি চর্চার আওতায় আনা যায় তাহলে কেউ মানুষ হত্যার মতো কাজ করতে পারবে না।

জঙ্গিবাদ নির্মূলে অভিনেতা তারিক আনাম খান, ইরেশ জাকের, শহীদুল্লাহ সেলিমসহ সংস্কৃতি জগতের অনেকে তাদের পরামর্শ দেন। এসময় জঙ্গিবাদ নির্মূলে পুলিশের পক্ষ থেকে সংস্কৃতিকর্মীদের আহ্বান জানানো হয়। সংস্কৃতিকর্মীরাও পুলিশের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours