নিউজ ডেস্ক : বিএনপি যেন এক বিভীষিকার নাম। হত্যা, অগ্নিসন্ত্রাস, দুর্নীতি থেকে শুরু করে এহেন কোন অপকর্ম নেই, যা দলটির নেতাকর্মীরা করেননি। করেছেন মানুষের সম্পদ লুটের পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্মম-নৃশংস অত্যাচারও। যার প্রমাণ মেলে ২০০১ সালের ১ অক্টোবর বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের আগে। সেসব খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন সূত্রের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, ২০০১ সালের নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াত জোট হিন্দুদের ওপর তাণ্ডব চালায়। কারণ তারা মনে করেছিলো হিন্দুরা আওয়ামী লীগকেই ভোট দেবে। তাই সে সময় বিএনপি জোটের হামলায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ছিলো বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, যশোর, কুমিল্লা ও নরসিংদী। ওই সময় আক্রমণকারীরা হিন্দুদের বাড়িতে ঢুকে তাদের পরিবারের সদস্যদের মারধর, সম্পত্তি লুটপাট এবং অনেক হিন্দু নারীদের ধর্ষণ করে। এর সবই ছিলো পরিকল্পিত।
তাদের এমন সব বর্বর অত্যাচার সইতে না পেরে ওই সময়ে শত শত হিন্দু পরিবার সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যায়। এমনকি দূরবর্তী আত্মীয়দের বাসায় গিয়েও আশ্রয় নেয়। পরে সাংবাদিকদের কাছে সাক্ষাৎকারে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষেরা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে হিন্দুদের হামলার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে তাদের মন্দিরও হামলার শিকার থেকে বাদ পড়েনি।
কানাডার ইমিগ্রেশন এবং শরণার্থী বোর্ডের গবেষণা অধিদপ্তরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০১ সালের ১ অক্টোবর বাংলাদেশে নির্বাচনের সময়কালে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার ঘটনাগুলো বিবিসি, গাল্ফ নিউজ, প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পায়। সেসব রিপোর্টে বলা হয়, ঘটনাগুলোতে ধর্ষণ, নির্যাতন, হত্যা ও লুটপাটের পাশাপাশি হিন্দুদের ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সহিংসতার শিকার হয়ে শত শত হিন্দু পরিবার সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে এই খবর যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা প্রতিবেদন ২০০৫-এ প্রকাশ পায়। সেখানে বলা হয়, হিন্দুদের ওপর সহিংস আচরণ করেছে যারা ঐতিহ্যগত ভাবেই আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। পাশাপাশি প্রতিবেদনটিতে বিভিন্ন ঘটনার মধ্যে হত্যা, ধর্ষণ, লুট এবং নির্যাতনের কথাও উল্লেখ করা হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এবং ক্ষমতার বাইরে বিষধর সাপ থেকেও ভয়ানক। যার প্রমাণ দেশের জনগণ তাদের শাসনামলে পেয়েছে। তারা দেখেছে রক্ত-লাশের রাজনীতিতে সিদ্ধহস্ত এই রাজনৈতিক দলটি হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, প্রার্থনার স্থানে হামলা, ঘরবাড়ি নষ্ট, জোরপূর্বক উচ্ছেদ এবং উপাসনার সামগ্রী কিভাবে অবলীলায় নষ্ট করে উল্লাস করেছে। তাই, নতুন করে এই সন্ত্রাসী সংগঠনকে নিয়ে কিছু না বলে বরং আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে যাতে কোনভাবেই তাদের আর পুনরুত্থান না হয় এবং কোন মায়ের কোল খালি না হয়।
+ There are no comments
Add yours