জলবায়ু মোকাবেলায় ফান্ড গঠন করেছে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ প্রথম স্বল্পোন্নত দেশ যারা নিজস্ব সম্পদ দিয়ে ‘জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠন করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনে অভিযোজন ও প্রশমন ব্যবস্থায় প্রতি বছর সরকার চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সম্প্রচার হওয়া লেটস টকে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকারে আসার পর জলবায়ু নিয়ে নিজস্ব ফান্ড করি।

অনেকগুলো প্রকল্প নিয়ে কাজ করি। জলবায়ুর ডেমেজটা যাতে না হয় এর জন্য নীতিমালা করে দিয়েছি। উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজায়ন ও বৃক্ষ রোপণেরও উদ্যোগ আমাদের। কাজ করে যাচ্ছি।

দেশে যাতে দুর্ভিক্ষ না দেখা দেয় এর জন্য আমদের এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখতে নিষেধ করেছি। যে যেভাবে পারেন উৎপাদন করবেন। যেন আমাদের কারো কাছে হাত পাততে না হয়।
আরো পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র সারাক্ষণ আমার বিরুদ্ধে লেগে আছে: প্রধানমন্ত্রী

কৃষি উৎপাদনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার গণভবনও কিন্তু রীতিমতো খামার বাগান।

আমিও চাষ করি। গ্রামের বাড়িতে সব জমি পরিষ্কার করে ফসল ফলাচ্ছি। তরুণ সমাজের প্রতি আশা থাকবে, পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। নিজেদের উৎপাদন নিজেদেরই করতে হবে।’
তিনি বলেন, ২০০৯এ সরকারে আসার পর কোপ-১৫এ কোর কমিটির সদস্য ছিলাম আমি।

ওখান থেকে আসার পরই আমরা নিজস্ব একটা ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি। এবং অ্যাডাপটেশন ও মিটিগেশন প্রোগ্রাম করে আমরা অনেকগুলো প্রকল্প নিয়ে কাজ শুরু করি। সেইসাথে আমরা মুজিব বর্ষে মুজিব মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যান আমরা করেছি। এই যে ড্যামেজ হবে ড্যামেজ হবে আমরা বলছি। এই ড্যামেজ কীভাবে উন্নয়নে নিয়ে আসব আমরা সেই চেষ্টা করি। আমরা আইন ও নীতিমালা করে দিয়েছি। পাশাপাশি আমরা অনেকগুলো প্রকল্প নিয়েছি। যেমন সমগ্র উপকূল অঞ্চলে গ্রিন বেল্ট করার পদক্ষেপ নিয়েছি।’
আরো পড়ুন: স্মার্ট সরকারের সঙ্গে অর্থনীতিও স্মার্ট হবে: প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, বৃক্ষরোপন ও জলবায়ু পরিবর্তনের ঘাত অভিঘাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য বিশেষভাবে দৃষ্টি দিই। আমার দলের পক্ষ থেকে ১৯৮৪-৮৫ সাল থেকে একটি প্রোগ্রাম করে আসছি সেটা হলো বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। ১৫ জুন বা পয়লা আষাঢ় থেকে পরবর্তী তিন মাস আমাদের দল ও সহযোগী দলের প্রত্যেকের ওপর নির্দেশ থাকে অত্যন্ত তিনটি করে গাছ লাগাবেন। এই প্রোগ্রামটা আমাদের নিজেরই। আমাদের অনেকগুলি প্রোগ্রাম কিন্তু নেওয়া আছে এবং নীতিমালা বিধিমালা আইন আমরা পাস করেছি।’

বৈশ্বিক সংকটের কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ, কোভিড অতিমারি, স্যাংশন-পালটা স্যাংশন, জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। তো সেখানে আমি আমার তরুণ সমাজকে বলব যে আমাদের এক ইঞ্চি জমি খালি থাকবে না। যার যত পতিত জমি আছে সেগুলো চাষ করবে। সেখানে ফসল উৎপাদন হবে। যে যা পারে উৎপাদন করবে। যে যা পারে খাবার জিনিস তৈরি করবে যেন আমাদের যেন আমাদের কারও কাছে হাত পাততে না হয়।’

যুব সমাজকে বৃক্ষ রোপনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আমাদের যুব সমাজকে বলব যে যেখানে পারবেন একটি করে গাছ লাগাবেন। আমাদের যুব সমাজের কাছে এটাই আমার আহবান থাকবে যার যেখানে যতটুকু জায়গা আছে গাছ লাগাতে হবে। পরিবেশ ঠিক রাখতে হবে আর উৎপাদন করতে হবে। কারোর থেকে যেন আমাদের হাত পেতে চলতে না হয়।’

জলবায়ু মোকাবেলায় কেউ দায় নেয় না দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা দূষণ করে তারা বেশি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয় না। আমাদের চেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে ছোট ছোট দ্বীপগুলো। সি-লেভেলে উঠে গেলে অনেক দেশই শেষ হয়েছে। তাদেরও আমরা আমাদের অ্যাডাপটেশন প্ল্যান এ ধারণাগুলো দিই। আমি তাদের বলি আপনাদের দেশের অবস্থাটা বুঝে আপনারা আপনাদের নিজেদের দেশের সুরক্ষার ব্যবস্থা করবেন।’

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এর আগে ২০০৮ সালে তরুণদের জন্য ‘দিন বদলের সনদ’ ইশতেহারের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা। আর এবার তরুণদের কথা মাথায় রেখেই স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের কথা বলেন তিনি।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours