যে কারণে রিজভী কারাগারে গেলে খুশি হয় বিএনপি

1 min read

নিউজ ডেস্ক: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রশ্নে আন্তর্জাতিক চাপ ‘নেই’ বলে সরকারের মন্ত্রীরা যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা ‘সঠিক নয়’ বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তবে বিষয়টিকে হাস্যকর মনে করছেন স্বয়ং ভিন্ন চিন্তার বিএনপির সিনিয়র নেতাকর্মীরা।

নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ১০ মে দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিং-এ রিজভী বলেন, সরকারকে নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে যেসব কথা হচ্ছে, তা ‘আড়াল করার জন্যই চাপাবাজি’ করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। বিএনপি নেতাদের মতে রিজভী সব সময় ইস্যু কেন্দ্রিক মন্তব্য দিয়ে ভাইরাল হতে চেষ্টা করেন। আর এটি বিব্রতকর বিধায় রিজভীর এখন থেকে প্রয়োজনীয় ইস্যুতে বক্তব্য দেয়ার আগে অনুমতি নিতে হবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের।

বিশেষ পরিস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটি। হাইকমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ীই নির্ধারণ হবে ইস্যু এবং বক্তব্যের ধরণ। সোজা কথায়, প্রতিটি প্রেস কনফারেন্সের আগে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় সবকিছু অবহিত করে হাইকমান্ডের অনুমতি নিতে হবে।

মূলত, গুরুত্বহীন ইস্যুতে যখন-তখন প্রেস কনফারেন্স ডেকে গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দেয়ায় তার প্রতি বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন দলটির সিনিয়র নেতারা। যার কারণে তিনি কারাগারে গেলে, বিএনপির অনেক নেতাই মনে মনে খুশি হয়েছিলেন। তবে কারাগার থেকে ফিরে আবার সেই আগের মতো বক্তব্য দেয়া শুরু করেছেন রিজভী।

আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক নিয়ে তার সাম্প্রতিক কতিপয় বক্তব্য নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে বিএনপি। তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন তার সঙ্গে দলের অবস্থানের কোনো মিল তো নেই-ই, উল্টো সাংঘর্ষিক। যা রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত বিএনপিকে খাদের কিনারে ঠেলে দিচ্ছে। ফেলে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলের সন্দেহের ঘূর্ণাবর্তে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত হয়ে বিএনপির হাইকমান্ড অনুমতি ছাড়া গণমাধ্যমের সামনে বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে রুহুল কবির রিজভীর ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দেয়।

এদিকে বিএনপিতে আবাসিক নেতা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন রুহুল কবির রিজভী। বারবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছাবন্দি হয়ে থাকার কারণে নেতাকর্মীদের কাছে তিনি এমন নামে পরিচিতি পান। কারাগার থেকে ফিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে রীতিমতো বাসাবাড়ি বানিয়ে ফেলেছেন রুহুল কবির রিজভী। কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় ছোট্ট একটি কক্ষে অবস্থান করেন তিনি। সেখানেই খাওয়া-দাওয়া আর রাত কাটান। নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবস্থান করে দৃশ্যত তিনি প্রতিদিন নিয়ম করে সকাল-বিকাল দুই দফা গণমাধ্যমকে ডেকে ব্রিফিং করেন। মাঝেমধ্যে ব্রিফিং ডাকেন রাত ৯টা-১০টায়। যেকোনো ইস্যুতে নিজের ইচ্ছায়, নিজের বক্তব্যই দলীয় অবস্থান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছেন।

ব্রিফিংয়ের আগে দলের নীতিনির্ধারকদের সিদ্ধান্ত, মনোভাব জানার অপেক্ষা কিংবা মহাসচিবের সঙ্গে পরামর্শও করেন না বলে অভিযোগ আছে। জাতীয় প্রেস ক্লাব, ডিআরইউ বা আশেপাশের এলাকায় বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম গুরুত্বহীন করে তুলেছেন তিনি। একই সময়ে ব্রিফিং ডেকে গণমাধ্যমকর্মীদের ডেকে নিয়েছেন নয়াপল্টনে। জোটের অনুষ্ঠানগুলোর দিন তাদের অনুরোধও রক্ষা করেন না রিজভী। যখন-তখন ব্রিফিং ডেকে গণমাধ্যমকর্মীদের ফেলে দেন বিপাকে। কিন্তু তার ভাবখানা এমন যেন প্রতিদিন প্রেস ব্রিফিং করে বিএনপিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন তিনি।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours