নিউজ ডেস্ক: চিকিৎসকদের পরামর্শে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক একিউএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন ধরণের রোগে ভুগছেন। তার সুচিকিৎসা প্রয়োজন। তার নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষার জন্য আজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। কয়েকটি পরীক্ষায় সময় লাগবে, এজন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
যদিও অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য। মূলত লন্ডন থেকে তারেক রহমান বার্তা দিয়েছেন, যত কিছুই হোক না কেন দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালেই রাখতে হবে। কারণ, তিনি হাসপাতালে থাকা মানেই নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল হওয়া। তাই সুস্থ হলেও তিনি যাতে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরতে না পারেন, সেদিকে লক্ষ্য রাখার জোর তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বিগত নয় মাস বাসায় ছিলেন খালেদা জিয়া। এতে আন্দোলন করার মতো কোনো ইস্যু খুঁজে পাচ্ছিলো না বিএনপি। ফলে রাজনৈতিকভাবে আরো পিছিয়ে পড়ে দলটি। এর কারণে খানিকটা বাধ্য হয়েই খালেদা জিয়েকে হাসপাতালে পাঠাতে চাইছেন তারেক রহমান। যদিও বিশিষ্টজনরা বলছেন, যে নিজের গর্ভধারিণী মাকে নিয়েও রাজনীতি করে, সে আর যাই হোক ‘প্রকৃত মানুষ’ হতে পারে না।
বিশ্বস্ত সূত্রের তথ্যমতে, লন্ডনে নিজের চোখ ধাঁধানো আয়েশি জীবন যাপনে প্রতি মাসে মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন হয় তারেক রহমানের। যার সিংহভাগই আসে পদ-মনোনয়ন এবং তদবির বাণিজ্য দিয়ে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাস শেষের আগে তার টাকা খরচ হয়ে যায়, তখন তিনি নানা অজুহাতে বড় বড় অংকের চাঁদা দাবি করেন নেতাকর্মী ও দাতাদের থেকে। বর্তমানে তারেক নেমেছেন নতুন মিশনে। বলেছেন, সুস্থ হলেও যে কোন মূল্যে দলীয় চেয়ারপারসনকে হাসপাতালে রাখতে হবে। এতে সরকারকে দোষারোপ করে রাজনীতি করা যাবে। তাছাড়া খালেদার যদি কিছু হয়েও যায়, তার দায় সরকারের উপর চাপিয়ে নামা যাবে বৃহৎ আন্দোলনে। এরপর জনগণকে বিভ্রান্ত করে পৌঁছানো যাবে, সোজা ক্ষমতার মসনদে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, খালেদা এখন তারেকের নতুন ট্রামকার্ড। তিনি তাকে নিয়েই নতুন পরিকল্পনার জাল বুনেছেন। হারহামেশাই এ নিয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ব্যবসায়ী নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টুর সঙ্গে তিনি আলাপচারিতা করছেন। বলছেন, খালেদা জিয়া যতদিন হাসপাতালে থাকবেন ততদিনই বিএনপির লাভ। কারণ, এই সময়টাই বিএনপি যা-ই করুক না কেন, সবাই ভাববে দলীয় নেত্রীর মুক্তির লক্ষ্যেই করছে। তাই দোষ চাপবে সরকারের ঘাড়ে। আবার বার্ধক্যজনিত কারণে যদি খালেদা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারাও যান, তবে তার রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার জন্য মুখিয়ে আছে তারেক। তিনি পরিকল্পনা সাজিয়ে রেখেছেন, সবার কাছেই বলবেন, বিদেশ যেতে দেয়া হয়নি বলেই খালেদার মৃত্যু হয়েছে। আর বিষয়টি জনগণের মধ্যে পুশ করানো গেলেই সরকার পতনের আন্দোলন বেগবান হবে। যা তার সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। কারণ, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। চিকিৎসকরাও বলছেন, তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। তাই বলাই বাহুল্য, তারেকের লাভের গুড় পিঁপড়াতেই খাবে।
+ There are no comments
Add yours