নিউজ ডেস্ক: ‘নেই কাজ, তো খৈ ভাজ’ কিংবা ‘অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা’ কথাগুলো যে মিথ্যে নয়, তা আরও একবার প্রমাণিত হলো। এবার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ঘুমন্ত মেয়ের গলায় ছুরি ধরে জিম্মি করে এক ভাড়াটিয়া নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে ছাত্রদলের সাঙ্গপাঙ্গরা। এ ঘটনায় বাড়ির মালিকের ছেলে ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। বিশিষ্টজনরা বলছেন, এটাই মূলত ছাত্রদল তথা বিএনপির আসল চেহারা। এভাবেই তারা বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থের জন্য বিভিন্ন বয়সী নারীদের ধর্ষণ করছেন। যার সাম্প্রতিক উদাহরণ কক্সবাজারের আলোচিত ধর্ষণকাণ্ডে ছাত্রদল কর্মীর সংশ্লিষ্টতা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের স্বার্থেই তারা দেশব্যাপী এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছেন বলেও মন্তব্য রাজনৈতিকজনদের।
নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে, চল্লিশ বছর বয়সী তিন সন্তানের জননী তার দ্বিতীয় বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে পৌর সদরের দত্তপাড়া এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস শুরু করেন। তাদের ঠিক পাশের রুমেই থাকতেন বাড়ির মালিক একাদুলের ছেলে জুবায়েদ হোসেন আকাশ (১৯)। বিভিন্ন সময় সে ওই নারীকে দেখে কুবাক্য উচ্চারণের পাশাপাশি কুপ্রস্তাবও দিয়েছে। কিন্তু তার প্রস্তাবে ওই নারী রাজি না হওয়ায় এলাকার ছাত্রদলের সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে সে একটি পরিকল্পনা করে, যাতে ওই নারী শায়েস্তা হয়।
তারই জের ধরে ২৬ ডিসেম্বর (রোববার) রাত ১টার দিকে আকাশ ওই ভাড়াটিয়ার ঘরের দরজা খোলার জন্য ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। প্রথমে খুলতে না রাজি হলেও এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে দরজা খুলে দেয় ওই নারী। এরপর দেশীয় অস্ত্রহাতে আকাশ তার চার সঙ্গীকে নিয়ে রুমে প্রবেশ করে ভাংচুর চালায়। অস্ত্রধারীদের ভয়ে এ সময় ওই নারীর স্বামী পালিয়ে যান। পরে ওই পাঁচ যুবক মিলে তাকে ধর্ষণ করেন।
প্রথমে ভয়ে থাকলেও পরে ঘটনা স্থানীয়দের জানিয়ে ২৮ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) থানায় যান ওই নারী। বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে রাতে করেন মামলাও। অভিযুক্ত আসামিরা হলেন জুবায়েদ হোসেন আকাশ, আপন মিয়া, মো. জামাল মিয়া, বাবু ওরফে হাড্ডি বাবু ও মো. সোহেল মিয়া। তারা সবাই-ই দত্তপাড়ার বাসিন্দা। মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাড়ির মালিকের ছেলে ও প্রধান অভিযুক্ত জুবায়েদ হোসেন আকাশকে গ্রেপ্তার করে ২৯ ডিসেম্বর (বুধবার) সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করে। পরে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব আহাম্মদ তালুকদারের আদালতে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেয়।
বাংলানিউজ ব্যাংকের অনুসন্ধানে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত আকাশ এলাকায় চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া তাকে বিভিন্ন সময় ছাত্রদল ও বিএনপির মিছিলে সক্রিয় ভূমিকাতেও দেখা গেছে। অন্য আসামি বাবু ওরফে শরীফুল ইসলাম বাবু ওরফে হাড্ডি কিলার বাবুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা ছাড়াও আরও পাঁচটি মামলা রয়েছে। শুধু তাই নয়, এসব কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তারও হয়েছে এই সাবেক ছাত্রদল কর্মী।
এ ব্যাপারে ঈশ্বরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহিরুল ইসলাম মুন্না এই প্রতিবেদককে বলেন, আকাশ পাঁচজন মিলে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। স্বীকারোক্তি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। বাকিদের ধরতেও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে’ দিতে বিএনপির জুড়ি নেই। নিজেরা অপরাধ করে রাজনৈতিক স্বার্থ সিদ্ধি হাসিলের জন্য তারা দোষ দেয় সরকারি দলের। আর এর প্রমাণ দেশবাসী ইতোপূর্বে বহুবার পেয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ময়মনসিংহের এই ধর্ষণকাণ্ড। এমতাবস্থায় সরকারের পাশাপাশি আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, যাতে দেশবিরোধী চক্রটি কোনভাবেই তাদের নোংরা গন্তব্যে না পৌঁছাতে পারে।
+ There are no comments
Add yours