গুজবে ব্যর্থ হয়ে পদ্মাসেতুর ক্ষতিসাধনে বিএনপি-জামায়াতের নতুন কৌশল

1 min read

নিউজ ডেস্ক: ২৩ জুলাই (শুক্রবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে শিমুলিয়ায় আসার পথে ফেরি শাহজালাল পদ্মা সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়। এর মাত্র তিন দিন আগে গত ২০ জুলাই (মঙ্গলবার) ফেরি শাহ মখদুমও পদ্মাসেতুর ১৬ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়।

সোমবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে আসা ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দেয়। ফেরিতে থাকা একটি ট্রাক পাশের একটি প্রাইভেটকারের ওপর পড়লে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ সময় ফেরিতে থাকা এক নারীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন।

মাত্র বিশ দিনের ব্যবধানে পদ্মাসেতুর ১৬, ১৭ এবং ১০ নম্বর পিলারে ফেরির ধাক্কা। এটি কি নিছক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ? একটু পেছনে গেলেই সব কিছু পরিষ্কার করে বোঝা যাবে।

নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকেই শুরু হয় ষড়যন্ত্র। পদ্মা সেতু নিয়ে উঠে দুর্নীতির অভিযোগ। এর ফলে বিশ্বব্যাংক এবং জাইকা অর্থায়ন করতে অস্বীকৃতি জানায়।

প্রশ্ন হলো, দুর্নীতির অভিযোগ কারা তুলেছিল? দেশের সবাই জানে, পদ্মাসেতুর দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে রগরগা মন্তব্য করেছিল খালেদা জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াতের দেশি-বিদেশি এজেন্টরা। আর বিশ্বব্যাংকের কাছে চিঠি দিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়েছিল বিএনপির মদপুষ্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সাথে তিনি হিলারি ক্লিনটনকেও পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হচ্ছে এমন অভিযোগ করেন।

পরবর্তীতে কানাডার আদালতে প্রমাণিত হয় যে, পদ্মা সেতু নিয়ে কোন প্রকার দুর্নীতি হয়নি এবং মামলা খারিজ হয়ে যায়। বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ যেন পদ্মা সেতুর সুফল ভোগ করতে না পারে সেজন্য এই সেতু নির্মাণ বানচাল করতে সদা তৎপর ছিল বিএনপি-জামায়াত চক্র। তখন নতুন গুজব পদ্মাসেতু তৈরিতে ১ লক্ষ ৭০ হাজার মাথা লাগবে। তখনকার ঘটনাগুলিও দেশবাসী আজও ভোলেনি। এই গুজবের পেছনেও ছিল একই শক্তি। এবং তারা নানাভাবে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন এটি গুজব না সত্যি। কারণ গুজবটি ছড়িয়েছিলেন তাদের এজেন্টরাই।

বিএনপি-জামায়াতের এসব গুজব, অপপ্রচার মোকাবিলা করে একে একে পদ্মাসেতুর সকল পিলার নদীর বুকে দাঁড়াতে সক্ষম হয়। দেশবিরোধী শক্তির সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জননেত্রী শেখ হাসিনার অদম্য নেতৃত্বে সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মাসেতু আজ সম্পূর্ণ দৃশ্যমান।

অচিরেই যখন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে ঠিক এর আগেই শুরু হয়েছে নতুন ষড়যন্ত্র। বারবার পদ্মাসেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, এটি কী নিছকই দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।

পদ্মাসেতু নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শেষ মন্তব্যটিই পরিষ্কার করে দেয় এটি দুর্ঘটনা না ষড়যন্ত্র। খালেদা জিয়া বলেছিল- ‘এই সেতু দিয়ে কেউ চলাচল করতে পারবে না। জোড়াতালি দিয়ে বানানো সেতুতে রিস্ক আছে’।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বারবার এই ধাক্কা লাগার ঘটনাকে কোন দুর্ঘটনা নয় বরং পদ্মা সেতু নিয়ে ষড়যন্ত্রের ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ। এই সেতু নির্মাণে অনেক বড় দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তির পরাজয় হয়েছে। তারা তারা থেমে নেই, তাদের এই পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে যেকোনো কিছুই করতে পারে। সরকারকে এই অপশক্তি মোকাবিলায় সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে। কারণ এই অপশক্তি সব সময় তৎপর বাঙালির স্বপ্নের সেতু, গর্বের সেতু পদ্মাসেতুর ক্ষতি করতে, শেখ হাসিনার অর্জনকে ম্লান করতে।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours