ঝরতে ঝরতে নিঃশেষ হওয়ার পথে বিএনপির রাজনীতি!

1 min read

নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির রাজনীতি ধীরে ধীরে নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। বিগত এক যুগে অসংখ্য নেতা বিএনপির রাজনীতি ত্যাগ করে অন্য দলে যোগ দিয়েছেন। সর্বশেষ দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বিএনপি নেতা জাহিদুর শপথ নিয়েছেন, বাকিদেরও সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে খানিকটা বিব্রত বিএনপির সিনিয়র নেতারা।

এমন দুর্যোগকালীন সময়ে সান্ত্বনা ব্যাখ্যায় শনিবার (২৭ এপ্রিল) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সিদ্ধান্তের বাইরে দুই-একজন শপথ নিলে তাতে দলের কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ বিএনপি একটি বট গাছের মত, দু’একটা পাতা ঝরলে তাতে কিছু যায় আসে না।

এদিকে খন্দকার মোশাররফের এমন বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা।

এই বিষয়ে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, বলতে দ্বিধা নেই যে, নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে বিএনপি। আমি বিএনপি থেকে বেরিয়ে যাবার পর থেকে অসংখ্য নেতাই বিএনপি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। সর্বশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অন্তত ৫ হাজার ছোট বড় নেতা কর্মী বিএনপি ছেড়ে বিভিন্ন দলে যোগ দিয়েছেন। আর উক্ত নির্বাচনে শোচনীয় হারের পর উপজেলা নির্বাচনে যখন বিএনপি যোগ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, ঠিক তখন বিএনপির একটি পক্ষ উপজেলা নির্বাচনের প্রতি আগ্রহী হয়ে বিএনপি ত্যাগ করে। ঠিক তখনও বিএনপি থেকে বলা হয়, দুই-চার হাজার নেতা চলে গেলে এতে বিএনপির কিছু আসে যায় না। কিন্তু এভাবে করে বিএনপির সব নেতাই যদি চলে যায়, তখন বিএনপি নেতৃত্ব সংকটে পড়ে গিয়ে আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে টিকতে পারবে না বলেই ধারণা করা যাচ্ছে।

বিষয়টি ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বিএনপি রাজনৈতিক সংকটে রয়েছে। আর এই সুযোগে অনেক নেতাই দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। এতে আমাদের লড়াই করার শক্তি কিছুটা হলেও কমে যাচ্ছে। তবে খন্দকার মোশাররফ বলছেন, দু একটা পাতা ঝরলে তাতে কিছু হয় না, এটা শুধু মাত্র বলার জন্য বলা। কারণ হেরে যাবার কারণ হিসেবে সব সময় হেরে যাওয়া দলটি কোনো না কোনো অজুহাত দেয়। কিন্তু হার তো স্বীকার করতেই হয়।

এদিকে, বিএনপির বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করে এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, একে একে সব নেতাই বিএনপি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আর প্রতিবারই বিএনপি বলছে, এতে কিছু আসে যায় না। এসব কথা বলে শুধু মাত্র জনগণের চিন্তায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা যায়, কিন্তু জনগণের মন থেকে বিএনপির রাজনৈতিক দুর্বলতার চিত্র মুছে ফেলা যাবে না। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে জয়ী নেতাদের শপথ গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত দেয়া হয় কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে। কিন্তু এরপরেও শপথ নিতে চাচ্ছে বিএনপি থেকে জয়ী নেতারা। বোঝা যাচ্ছে, বিএনপির নেতৃত্ব কতোটা ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। নেতৃত্ব শক্তিশালী না হলে আগামী ২০ বছর পর বিএনপি নামক একটি রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে ছিলো, তাও ভুলে যাবে সাধারণ জনগণ।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours