স্পষ্ট হচ্ছে সরকার পতন আন্দোলনের উদ্দেশ্য, দেশে-বিদেশে গভীর ষড়যন্ত্রে শঙ্কিত বিশেষজ্ঞরা

1 min read

 

নিউজ ডেস্ক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট হারিয়ে শোচনীয় পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টকে। দেশি-বিদেশি শক্তিদের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতার পরও জাতীয় নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ার পর এবার অসাংবিধানিক উপায়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করার পাঁয়তারায় মেতেছে বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্ট। বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে এমন সব তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এছাড়া ড. কামাল ঘোষণা দিয়েছেন যে, আগামী এক মাসের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের ভোটে সরাসরি নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রের আলামতও প্রকাশ পাচ্ছে প্রতিদিন।

এদিকে হঠাৎ করে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুলের বিদেশ গমন, যুক্তরাষ্ট্র সফরে একাধিক দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে গোপন বৈঠক এবং লন্ডন থেকে জামায়াতের রাজনীতির হঠাৎ গতিধারা পরিবর্তনে দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের ক্ষতি অনুমান করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। দেশের বিরাজমান সমৃদ্ধি-শান্তি বিনষ্ট করতে বিএনপির প্ররোচনায় একটি সংঘবদ্ধ আন্তর্জাতিক চক্র সরকার পতন ও রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা করছে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা।

দেশের অভ্যন্তরে ঘটে যাওয়া অতি-সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোকে ঝড়ের পূর্বাভাস দাবি করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান বলেন, অতি-সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অদূর ভবিষ্যতে সর্বনাশের ট্রেলার বলা যেতে পারে। হঠাৎ করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মতো সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ড, গাজীপুরে অগ্নিকাণ্ড, শ্রমিক অসন্তোষের পেছনের অদৃশ্য শক্তির পায়তারা ও চট্টগ্রামের রাজখালীর বস্তিতে অগ্নিকাণ্ডে সাধারণ মানুষের হতাহতের ঘটনাগুলো স্বাভাবিক নয়। এই তিনটি অন্তত দুটি জায়গায় আগুন লাগার আগে মুখোশধারী লোকের আনাগোনা দেখা গেছে। বিষয়গুলো উদ্বেগজনক।

তিনি কিছুটা সময় নিয়ে বলেন, আমি বড় ধরনের ঝড় আসার পূর্বের গুমোট পরিবেশটা অনুভব করতে পারছি। জাতীয় নির্বাচনে পরাজয়ের পর ঐক্যফ্রন্টের নীরবতা, ড. কামাল ও মির্জা ফখরুলের বিদেশ সফর নিয়েও নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। শুনেছি, বিদেশি প্রভুদের মাধ্যমে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখলেরও পাঁয়তারা চলছে। আমি শুনেছি, সিঙ্গাপুর, লন্ডন, যুক্তরাষ্ট্র সফরে ইসরাইলের মোসাদ ও পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই- এর সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপির নেতারা। এছাড়া সারাবিশ্ব যেন নতুন সরকারকে স্বীকৃতি না দেয় সেজন্যও কাজ করছেন বিভিন্ন পেইড এজেন্ট। এগুলো ভালো লক্ষণ নয়। এমন বিপদ থেকে দেশ রক্ষা করতে সরকারকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে। এরইমধ্যে আবার জামায়াত কৌশলে নেতাদের পদত্যাগ ও বহিষ্কার করিয়ে সরকারকে নির্দিষ্ট ইস্যুতে ব্যস্ত রাখার অপচেষ্টা করছে। যাতে সরকার পতনের কৌশলে কোন রকম বাধা সৃষ্টি না হয়।

বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতিবাচক বিষয়গুলোকে দেশের জন্য অশনি সংকেত দাবি করে নিরাপত্তা বিশ্লেষক মুনিরুজ্জামান বলেন, জানতে পেরেছি যে, বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা কয়েকটি দেশের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে দেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে লেলিয়ে স্বার্থ উদ্ধার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারই কিছু আলামত দেখা গেছে সাম্প্রতিক সময়ে। দেশের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ড, ড. কামালের নতুন নির্বাচনের আল্টিমেটাম, বিদেশে নেতাকর্মীদের দৌড়ঝাঁপ, গোপন বৈঠক- সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের স্পষ্ট আলামত।

তিনি আরো বলেন, শুনেছি খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে হিংসাত্মক আন্দোলনের ছক আঁকা হচ্ছে বিদেশে বসে। রাষ্ট্রকে ব্যর্থ হিসেবে তুলে ধরে তৃতীয় শক্তির আনাগোনা বৃদ্ধি করাতে একটি রাজনৈতিক চক্র কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে। ক্ষমতার জন্য মানুষ এতোটা স্বার্থপর এবং রক্তপিপাসু হতে পারে সেটা জানা ছিল না। ড. কামাল কোন শক্তির জোরে এক মাসের মধ্যে সরকার পতনের আভাস দেন, সেটি খুঁজে বের করা দরকার। ভঙ্গুর একটি রাজনৈতিক জোট, যারা নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট পায় না, তারা কোন ভরসায় বিনিয়োগ করছে, দৌড়ঝাঁপ করছে-সেটি একইসঙ্গে উদ্বেগজনক এবং রহস্যজনক। আমার মনে হচ্ছে, জোটের কার্যক্রম দুটি অংশে ভাগ করা হয়েছে। একটি অংশ প্রাত্যহিক অভিযোগ করে জনগণ ও সরকারের দৃষ্টি একদিকে আটকিয়ে রাখবে। আর অন্য একটি পক্ষ গোপনে বিভিন্ন বিদেশি শক্তি ও চক্রান্তকারী মার্সেনারি শক্তিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সরকার পতনের আন্দোলনকে রক্তক্ষয়ী করার চূড়ান্ত প্রচেষ্টায় ব্যস্ত থাকবে। বিষয়গুলো দেশ ও জনগণের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours