সেই নাজমুলের বাড়িতে হাজির হলেন ইউএনও

1 min read

নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘ দুই বছর ধরে জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত ৩২ বছর বয়সী যুবক নাজমুল ইসলামকে দেখতে তার বাড়িতে গেলেন পাবনার আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আকরাম আলী। শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ আরও কয়েকজন উপজেলার মাঝপাড়া ইউনিয়নের কালামনগর গ্রামে তার বাড়িতে গিয়ে হাজির হন। এসময় তিনি নাজমুলের রোগ ও উপার্জনের বিষয়ে খোঁজখবর নেন। এসময় তিনি নাজমুলের স্ত্রী লাকী খাতুনকে একটি ভিজিডি কার্ডের ব্যবস্থা করে দেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আকরাম আলী তিনি বলেন, নাজমুলের বাড়িতে গিয়ে সরাসরি দেখে এসেছি তার বর্তমান অবস্থা। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে নাজমুলের চিকিৎসার টাকাসহ তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।

তিনি বলেন, নাজমুলের বিষয়টি ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকসহ সকল স্তরের মানুষ অবগত। তাকে সুস্থ করা এবং তার পরিবারকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করতে সার্বিক সহযোগিতা করবো আমরা।

এ বিষয়ে পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, নাজমুলের বিষয়ে ইতোমধ্যে আমরা অবগত হয়েছি। আটঘরিয়ার ইউএনও গিয়েছিল তার বাড়িতে। নাজমুলের উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে আগ্রহ থাকলে আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা করবো।

এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ‘দেখে বোঝার উপায় নেই তিনি নাজমুল’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে বিষয়টি নজরে আসে দেশবাসীর। সংবাদ প্রকাশের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হৃদয়বান মানুষগুলো নাজমুলের চিকিৎসার পরামর্শ দেয়াসহ খোঁজখবর নেয়া শুরু করেছেন।

নাজমুলের স্ত্রী লাকী খাতুন জানান, গত দুই দিনে প্রায় শতাধিক মানুষ ফোন করে আমার স্বামীর খোঁজখবর নিয়েছেন। অনেকেই আমাদের বিকাশ ০১৭২৪-০৩৫৫৪১ নম্বরে টাকাও পাঠিয়েছেন।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সাড়ে ৬ হাজার টাকা বিকাশে পেয়েছি। টাকা পাবার পর চাল, ডালসহ ওষুধ কিনেছি। তিনি জাগো নিউজের এই প্রতিবেদককে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, আপনাদের কারণে অনেকদিন পর মানুষ আমাদের এভাবে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, দুই বছর ধরে জটিল চর্মরোগে আক্রান্ত পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার ৩২ বছর বয়সী যুবক নাজমুল ইসলাম। এ রোগের কারণে তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত চামড়া উঠে যাচ্ছে। বর্তমানে চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই তার বয়স ৩২ বছর। টগবগে যুবক কর্মঠ নাজমুল এখন নিস্তেজ। অসহ্য যন্ত্রণায় কাটছে তার প্রতিটি দিন। একাধিক ডাক্তার ও কবিরাজের চিকিৎসা নিয়েও কোনো ফল পাননি তিনি।

ভ্যান চালিয়ে ও মাছের ব্যবসা করে যা আয় করেছিলেন সবটাই শেষ করেছেন চিকিৎসা করাতে গিয়ে। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে তার আয় উপার্জন। প্রতিবেশীদের সহায়তায় সংসার চলছে তার। অসুস্থ স্বামী আর এক মেয়েকে নিয়ে দিশেহারা পড়ছেন স্ত্রী লাকী খাতুন।

নাজমুল ইসলাম উপজেলার মাঝপাড়া ইউনিয়নের কালামনগর গ্রামের মৃত সাদেক আলীর ছেলে দরিদ্র ।

তার রোগের ব্যাপারে কথা বলা হয় পাবনা জেনারেল হাসপাতালের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ রোগের নাম এক্সফোলিয়েটিভ ডার্মাটাইটিস। তাকে সুস্থ করতে দরকার উন্নত চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা। যা পাবনায় নেই। সে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি ছিল, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা বা রাজশাহী নেয়ার জন্য পরিবারকে বলেছি।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours