তাপে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া

0 min read

নিউজ ডেস্ক: শীতে রীতিমতো কাঁপছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রচণ্ড ঠান্ডায় ২১ জনের প্রাণ গেছে। মেরু অঞ্চল থেকে আসা হিম শীতল বাতাস বরফে জমে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য পশ্চিমের অঙ্গরাজ্যগুলো। এক দশকে দেশটিতে সবচেয়ে খারাপ ধরনের ঠান্ডা। অথচ এই তীব্র দাবদহে পুড়েছে অস্ট্রেলিয়া। জানুয়ারি মাসে স্মরণকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দেশটিতে। দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে গত মাসে। ওই মাসে গড় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে অতিক্রম করে।

গতকাল শুক্রবার বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া অফিস বলছে, গ্রীষ্মে দাবদহের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার তাপমাত্রা ছিল নজিরবিহীন। জানুয়ারির পাঁচ দিনের তাপমাত্রা অতীতের ১০টি গ্রীষ্মের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যায়। ওই পাঁচ দিন অস্ট্রেলিয়াজুড়ে তাপমাত্রা ছিল দৈনিক ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। জানুয়ারিতে অন্তত দেশটির ১০ জায়গায় সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে ৪৯ ডিগ্রি পর্যন্ত পৌঁছেছিল। অ্যাডিলেডে জানুয়ারিতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড গড়ে। সেখানে প্রথমবারের মতো ৪৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি থেকে ৪৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে পৌঁছায় তাপমাত্রা। মেলবোর্নে অনুষ্ঠেয় অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কয়েকটি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছিল শুধু গরমের কারণে।

তীব্র দাবদহের ফলে অস্ট্রেলিয়ার বনভূমিতে আগুন ধরে অনেক বন্য প্রাণী মারা গেছে। ইতিমধ্যে আগুনে পুড়ে ৯০টি ঘোড়ার মৃত্যু হয়েছে। দাবদহের কারণে নিউ সাউস ওয়েলস রাজ্যে খরায় লাখ লাখ মাছ মারা গেছে। এ ছাড়া হাসপাতালে রোগী ভর্তির সংখ্যাও বেড়েছিল।

অস্ট্রেলিয়ায় দিনে দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। জানুয়ারিতে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার নতুন রেকর্ড ২০১৩ সালের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। এ বছরে তাপমাত্রা ৪৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে গিয়ে পৌঁছায়। এ বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সেটাই ছিল সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা। গত বছর সিডনিতে ৪৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা হয়েছিল। ১৯৩৯ সালের পর এটাই সবচেয়ে বেশি দাবদহের দিন ছিল। ১৯৩৯ সালে সে সময় সিডনির তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অস্ট্রেলিয়ার জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্ড্রু ওয়াটকিনস বলেন, জানুয়ারি মাসজুড়ে তীব্র দাবদাহ মানুষের জীবনে প্রচণ্ড প্রভাব ফেলেছে। অস্ট্রেলিয়ার একটি বড় অংশে জানুয়ারির বেশির ভাগ দিনই আমরা প্রচণ্ড দাবদাহ পরিস্থিতি দেখেছি, যা গড় সময় এবং তাপমাত্রা হিসেবে সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে। এ ছাড়া বেশির ভাগ এলাকায় গড়ে বৃষ্টিপাতও কম ছিল।

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্থলভাগ এবং সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ব্যাপারে আগেই সতর্ক করেছিল দেশটির আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। ২০১৮ সালকে তৃতীয় এবং ২০১৭ সালকে চতুর্থ দাবদহের বর্ষ হিসেবে নিশ্চিত করেছেন দেশটির আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তারা। গত বছরের জলবায়ু–বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দেশটিতে তীব্র দাবদহ বাড়ছে। ফলে দেশটি নতুন বিপদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।

জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়াজুড়ে তাপমাত্রা ছিল দৈনিক ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। জানুয়ারিতে অন্তত দেশটির ১০ গত বছর সবচেয়ে বড় খরা হয় অস্ট্রেলিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায়। নভেম্বরে কুইন্সল্যান্ডে বনভূমিতে আগুন লেগে হাজারো মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিল।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours