এবার নারী প্রার্থী বেড়েছে ৩৮.২৪ শতাংশ

1 min read

স্বাধীন বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই সর্বোচ্চসংখ্যক নারী প্রার্থী হয়েছেন। গত নির্বাচনের তুলনায় এবারের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রার্থিতায় নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ৩৮.২৪ শতাংশ। অবশ্য পুরুষ প্রার্থীর তুলনায় মাত্র ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী রয়েছেন ভোটের মাঠে।

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৬৮ জন নারী প্রার্থী ছিলেন, এবার এ সংখ্যা ৯৪।

এর মধ্যে ১৪টি রাজনৈতিক দলের ৬৮ জন প্রার্থী রয়েছেন, ২৬ জন স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ১৩টি রাজনৈতিক দল কোনো নারী প্রার্থী দিতে পারেনি। তার পরও একাদশ সংসদের নির্বাচিত সর্বোচ্চ ২২ জন নারী সংসদ সদস্যের রেকর্ড এবার ভঙ্গ হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।
রাজনৈতিক দলের সব পর্যায়ে কমিটিতে ২০২০ সালের মধ্যে নারী নেতৃত্ব ৩৩ শতাংশ করাসহ বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধন পায় রাজনৈতিক দলগুলো।

তার পরও কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও রাজনীতিতে তাঁরা পিছিয়ে আছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৫ শতাংশের কম নারী প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত হওয়ার পর ৩০০টি সংসদীয় আসনে মোট এক হাজার ৮৯৫ জন প্রার্থীর মধ্যে নারী আছেন মাত্র ৯৪ জন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে ৭.৬০ শতাংশ, বিরোধী দল জাতীয় পার্টিতে (জাপা) ৩.৩৯ শতাংশ এবং স্বতন্ত্র ৬.৫২ শতাংশ প্রার্থী নারী।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে ইসিতে নিবন্ধিত ২৭টি রাজনৈতিক দল অংশ নিচ্ছে। এর মধ্যে ১৩টি দল কোনো নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেয়নি। দলগুলো হলো ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণফোরাম, জাকের পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও সাম্যবাদী দল।

স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত দেশে মোট ১১টি নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯৭৩ সালে প্রথম সংসদ নির্বাচনে মাত্র দুজন নারী প্রার্থী ছিলেন।

এরপর ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে ১২ জন, ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৩ জন, ১৯৯১ সালে পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ৩৯ জন, ১৯৯৬ সালে সপ্তম সংসদ নির্বাচনে ৩৭ জন, ২০০১ সালে অষ্টম সংসদ নির্বাচনে ৩৮ জন, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে ৫৬ জন, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ৬৮ জন নারী প্রার্থী ছিলেন। ১৯৮৮ সালে চতুর্থ, ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ ও ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল বর্জন করা নারী প্রার্থী ছিলেন কম। তবে এবারও বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো নির্বাচন বর্জন করলেও মাঠে নারী প্রার্থীর সরব উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
ইসির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এবারের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সর্বোচ্চসংখ্যক ২০ জন নারীকে মনোনয়ন দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রমুখ। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ এবার প্রার্থী না হলেও প্রধান বিরোধী দল জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য শেরিফা কাদেরসহ ৯ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কংগ্রেস ৯ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি ৯ জন নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে।

এ ছাড়া স্বতন্ত্র নারী প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় আছেন সুনামগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য জয়া সেনগুপ্ত, হবিগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আমাতুল কিবরিয়া কেয়া চৌধুরী। আরেক সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা-১৪ আসনে। রাজশাহী-১ আসনে প্রার্থী হয়েছেন নায়িকা মাহিয়া মাহি (শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া)। গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলি এবার প্রার্থী হয়েছেন।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours