অগ্নিসন্ত্রাসী ও হুকুমদাতাদের বিচার হতে হবে: তথ্যমন্ত্রী

1 min read

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, যারা পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে, শুধু তাদের বিচার হলেই হবে না, যারা এর হুকুমদাতা-অর্থদাতা, তাদেরও বিচার হতে হবে। এই অপরাধের যদি বিচার না হয় তাহলে এ ধরনের অপরাধ আরও ঘটবে।

সম্প্রতি রাজধানীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ’ সংগঠন আয়োজিত ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসী ও হুকুমদাতাদের বিচারের দাবিতে প্রতীকী অনশন’ শীর্ষক কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি-জামাতের সন্ত্রাসীরা ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে অসহায় মানুষের ওপর, স্কুলগামী বালক-বালিকার ওপর, বিশ্ব ইজতেমা থেকে ফেরত মানুষের ওপর, বাসযাত্রীদের ওপর, অবরোধের কারণে থেমে থাকা ট্রাকে ঘুমন্ত চালকের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে তাদের শরীর অঙ্গার করে দিয়েছে, মানবতাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে।

তিনি বলেন, শুধু পেট্রোল বোমা নিক্ষেপকারীরাই অপরাধী নয়, এর নির্দেশ ৭ সমুদ্র ১৩ নদীর ওপারে লন্ডন থেকে এসেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, গয়েশ্বর রায়, মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির নেতারাই এই হামলার নির্দেশদাতা। তাদের নির্দেশে, তাদের অর্থায়নেই এই পেট্রোল বোমা হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। আজ সেই পেট্রোল বোমা হামলার শিকার যারা, তারা বিচারের দাবি নিয়ে এসেছে। মির্জা ফখরুল সাহেব বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু তার দলের নেতৃত্বে যে অপরাধ হয়েছে, তার দায় তিনি এড়াতে পারেন না। সব অপরাধীরই বিচার হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসের শিকার এই খেটে খাওয়া মানুষগুলো এ দেশের নাগরিক ও মালিক। তারা রাজনীতি করে না, রাজনীতি বোঝে না এবং তারা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও যায়নি, প্রাত্যহিক কাজে জীবিকার তাগিদে বেরিয়েছিল। এই ধরনের ন্যক্কারজনক মানবতাবিরোধী ঘটনা বিশ্বের কোথাও ঘটেনি।

পেট্রোল বোমা হামলার শিকার ও তাদের পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি প্রয়োজন। তাই আমি মনে করি, এই মামলাগুলো দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে হওয়া প্রয়োজন এবং অগ্নিসন্ত্রাসের হুকুমদাতা, অর্থদাতাদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত। এই অপরাধের উপযুক্ত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবির সঙ্গে আমি একাত্মতা প্রকাশ করছি।

এ সময় বিদেশি সংস্থা, কূটনীতিকদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, যারা মানবাধিকারের কথা বলেন, তাদের উচিত এই অধিকার ক্ষুণ্ণ হওয়া মানুষগুলোর সাথে সংহতি জানানো। তাহলে এই ধরনের অপরাধ চিরতরে বন্ধ হওয়ার পথ সুগম হবে।

পেট্রোল বোমা হামলায় আহত সংসদ সদস্য এড. খোদেজা নাসরিনের সভাপতিত্বে অগ্নিসন্ত্রাসের আর্তনাদ সংগঠনের আহ্বায়ক শাহাদাৎ হোসেন বাবুলের সঞ্চালনায় ও মো. রাশেদুল ইসলামের সমন্বয়ে পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ গীতা রাণী সেন, নিহত নাহিদের মাতা রুনি বেগম, নিহত ইউসুফের সন্তান জাহেদুল ইসলাম, নিহত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী পারভীন, নিহত পুলিশ সদস্য সিদ্ধার্থের পিতা বিমল চন্দ্র সরকারসহ পেট্রোল বোমা হামলার শিকার প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ কর্মসূচিতে অপরাধীদের বিচার দাবি করে মর্মস্পর্শী বক্তব্য দেন।

পেট্রোলবোমায় আহত ও নিহতদের স্বজনদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আআমস আরেফিন সিদ্দিক, ঢাবি সমাজ কল্যাণ অনুষদের ডিন জিয়া রহমান, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী পীযুষ বন্দোপাধ্যায়, ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর প্রমুখ।

কর্মসূচিতে আসা পেট্রোল বোমায় আহত ও নিহতদের স্বজনদের পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভঙ্গ করান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours