নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিয়োগের জন্য সার্চ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গত বছরের ২০ ডিসেম্বর থেকে দেশের সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু হয়েছিল। এই সংলাপে নিবন্ধিত সব দলকেই আমন্ত্রণ জানান রাষ্ট্রপ্রধান। তবে আলোচনা-পরামর্শের অভাবে রাষ্ট্রপতির ঐ সংলাপে অংশ নেয়নি বিএনপি। রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিএনপির অংশ না নেয়া ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স রুমে সার্চ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে নতুন নির্বাচন কমিশনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের বাছাইয়ে গঠিত সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটির সঙ্গে বিশিষ্ট নাগরিকরা বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে বেশকিছু পরামর্শ ও অনুরোধ করেছেন তারা। বৈঠকে অংশ নিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ইসির জন্য তার পছন্দের আটজনের নাম প্রস্তাব করেছেন। বৈঠক শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেনের নাম প্রস্তাব করেছেন। আর নির্বাচন কমিশনার হিসেবে সাবেক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, সুজনের বদিউল আলম মজুমদার, সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া, সাবেক সচিব শওকাত আলী, সাবেক সচিব খালেদ শামস, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল এবং সাবেক আইন সচিব কাজী হাবিবুল আউয়ালের নাম প্রস্তাব করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, যত নাম এসেছে সেগুলো প্রকাশ করেন, যেন জনগণ দেখতে পারে। আপনারাও দেখেশুনে প্রস্তাব করতে পারেন।
এ সময় ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি গঠিত সার্চ কমিটির সঙ্গে বিএনপির বৈঠকে বসা উচিত বলে মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ বলেন, বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল বৈঠকে আসেনি। যারা আসেনি তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আনার চেষ্টা করে দেখেন। বিএনপি সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন করছে সেটি ভিন্ন বিষয়, তারা নির্বাচন কমিশন বিষয়ে নাম প্রস্তাব করতে পারে।
তিনি আরো বলেন, রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকবেই। বিএনপি রাজপথে দাবিদাওয়া আদায়ে আন্দোলন করবে, সেটি তাদের অধিকার। তবে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএনপি সংলাপে না বসে ঠিক করেনি। এখন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে যে সার্চ কমিটি কাজ করছে, তাদের সঙ্গে বিএনপির বসা উচিত হবে।
এ বিষয়ে পরিচয় গোপন করার শর্তে দলটির এক নীতিনির্ধারক ও দায়িত্বশীল নেতা বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে খেই হারিয়ে গেছে। দলের মধ্যে কোনো শৃঙ্খলা নেই। নেই কোনো পরিকল্পনা। দল চলছে একজনের ইশারায়।
তিনি বলেন, দলের ক্ষমতা যখন চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার হাতে ছিল, তখন দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা ছিল। কিন্তু তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে যাওয়ার পর থেকে দলের রাজনীতিতে শকুনের চোখ পড়েছে। আগে যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক বিজ্ঞজনদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করা হতো। কিন্তু এখন আর সেই চিত্র নেই। বুদ্ধিজীবী আছেন, কিন্তু নেই কোনো আলোচনা-পরামর্শ।
+ There are no comments
Add yours