নিউজ ডেস্ক: ব্যস্ততম শহর রাজধানীতে যেন ব্যস্ত সড়কগুলোও। নানা রকম কাজ নিয়ে দিগ্বিদিক ছুটছে মানুষ। শৃঙ্খলার অভাবে এরই মধ্যে ঘটে যাচ্ছে অসংখ্য দুর্ঘটনা। যেমনটা ঘটছে নিয়ম না মেনে যত্রতত্র রাস্তা পার হওয়ার ক্ষেত্রে। এটি যেমন ট্রাফিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ করা, ঠিক তেমনি সেখানে রয়েছে শতভাগ জীবনের ঝুঁকি। এসব এড়াতে ফুটওভার ব্রিজ-ই আমাদের সম্বল। কিন্তু প্রশ্ন হলো- নিরাপদ সড়কের জন্য তৈরি ফুটওভার ব্রিজগুলো চলাচলে কতটা নিরাপদ?
সাম্প্রতিক সময় রাজধানীর বেশ কয়েকটি ফুটওভার ব্রিজ ঘুরে দেখা মিলল একই রকমের চিত্র। দিনের বেলাই বখাটে ও হকারদের দখলে। আর সন্ধ্যা বেলা যেন নেশাখোর ও ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য। যেখানে নিরাপদ নয় নারী-পুরুষ কেউই।
সরেজমিনে দেখা যায়, টিকাটুলি, মুগদা, কোমলাপুর রেল স্টেশন ওভারব্রিজ, বনানী সৈনিকক্লাব, রমনা পার্কের সামনে, বিশ্বরোড, কুর্মিটোলা হাসপাতালের সামনের ওভারব্রিজ- সবখানের চিত্র প্রায় একই।
ফার্মগেটের ফুট ওভারব্রিজটা সকাল থেকে রাত অবধি ব্যস্ত! দিনে শত শত মানুষের চলাচল। কিন্তু হাঁটারও যেন জায়গা নেই একটু খানি। কষ্ট করে যেতে হয় কোনো রকম। হকারদের দখলে পুরোটাই। রাতের বেলা দখলে থাকে প্রতিতাদের। নেশাখোর-ছিনতাইকারীদের মিলন মেলাও বসে সেখানে। এছাড়া সন্ধ্যার পর প্রকাশ্যে চলে গাঁজার আসর। কিন্তু এসবে যেন নজর নেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। যেন দায়িত্ব নেই সিটি কর্পোরেশন-রাজউকেরও।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মৌসুমি আক্তার জানালেন, ফুটওভার ব্রিজগুলো দিয়ে কোনোভাবেই চলা যায় না। কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাস্তার মাঝ দিয়ে দেখে-শুনে পার হওয়া যায়। কিন্তু বখাটেদের নোংরা কথা আর হকারদের যন্ত্রণায় ফুটওভার ব্রিজে চলাচল কষ্টকর।
তেজগাঁও কলেজের ছাত্রী লাবনী আক্তার বলেন, আমি উত্তরা থেকে আসি। বাস থেকে নেমে ফুটওভার ব্রিজে উঠলে মনে হয় কোথায় এলাম। হাঁটার জন্যও কোনো জায়গা পাওয়া যায় না হকারদের কারণে। এটা নিয়ে কারো কোনো মাথা ব্যাথা নেই। আশা করি কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা সু-নজরে নেবেন।
সরকারি চাকরিজীবী কামরুজ্জামান বলেন, নিরাপদ সড়ক আমরা সবাই চাই। আর সে জন্যই তৈরি নিরাপদ ফুটওভার ব্রিজ। কিন্তু কতটা নিরাপদে রয়েছে সেটা তদারকি করা দরকার দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের। তাহলে আমরা নিরাপদে চলাচল করতে পারবো।
সাম্প্রতিক নিরাপদ ফুটওভার ব্রিজ নিয়ে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদ জানান এক বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী। তিনি লেখেন, ‘নিরাপদ সড়ক চাই আমিও। সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করি। কিন্তু ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। ফুটওভার ব্রিজে কিছু বখাটে ছেলেদের আড্ডাখানা রয়েছে, রাতে কোনো মেয়ে ফুটওভার ব্রিজ দিয়ে যেতে পারে না বখাটেদের জন্য। আর দিনের বেলাতে আমি নিজেই বিভ্রান্তিতে পরেছি। শুনতে হয়েছে অনেক কথা, যা প্রতিবাদের কোনো সুযোগ নেই।’ এ নিয়ে তিনি আরো লিখেছেন, যা ছবিতে রয়েছে।
এসব নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা উত্তম কুমার রয় বলেন, আমরা মাঝে মাঝেই অভিযান চালিয়ে থাকি। ফুটওভার ব্রিজগুলো এখন আগের থেকে অনেক দখলমুক্ত। এছাড়া ফুটওভার ব্রিজে নিরাপদ চলাচলের জন্য আরো ব্যবস্থা নিচ্ছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও এ নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে।
+ There are no comments
Add yours