ভাঙনের পথে জামায়াত, হঠাৎ কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মজিবুরকে দল থেকে বহিষ্কার

1 min read

নিউজ ডেস্ক: জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য মজিবুর রহমান মনজুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মজিবুর রহমান নিজেই শনিবার তাঁর ফেসবুক পেজে পোস্ট দিয়ে বহিষ্কারের বিষয়টি জানিয়েছেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক সূত্রও বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

শুক্রবার দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক পদত্যাগ করেন। মতিউর রহমান নিজামীসহ যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতাদের সাবেক এই প্রধান কৌঁসুলি এখন যুক্তরাজ্যে আছেন। সেখান থেকেই তিনি এই পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

পদত্যাগের জন্য আবদুর রাজ্জাক সুনির্দিষ্ট করে দুটি কারণ উল্লেখ করেন। তিনি মনে করেন, জামায়াত ৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করার জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চায়নি। একবিংশ শতাব্দীর বাস্তবতার আলোকে এবং অন্যান্য মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনকে বিবেচনায় এনে নিজেদের সংস্কার করতে পারেনি।

আজ বহিষ্কারের বিষয়ে মজিবুর রহমান তাঁর ফেসবুক পোস্টে জানান, ‘শুক্রবার আনুমানিক রাত সাড়ে সাতটার দিকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমির জনাব মকবুল আহমদের পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিষদের একজন সম্মানিত সদস্য আমাকে জানান যে আমার দলীয় সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে।’

মজিবুর রহমান জামায়াতের ছাত্রসংগঠন ইসলামি ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি। আবদুর রাজ্জাকের পদত্যাগের ঘোষণার পর আজ আবার মজিবুর রহমান তাঁকে বহিষ্কারের বিষয়টি জানালেন। শুক্রবার পদত্যাগ করার সময় রাজ্জাক যেমন দলের সঙ্গে তাঁর মতভিন্নতার কথা উল্লেখ করেছিলেন, মজিবুরও তাঁর দীর্ঘ পোস্টে দলের কিছু নীতির বিষয়ে তাঁর মতভিন্নতার কথা জানিয়েছেন। মজিবুর লিখেছেন, ‘বেশ কয়েক বছর যাবৎ সংগঠনের কিছু বিষয়ে আমি দ্বিমত করে আসছিলাম। মৌখিক ও লিখিতভাবে বৈঠকসমূহে আমি প্রায়ই আমার দ্বিমত ও পরামর্শের কথা সম্মানিত দায়িত্বশীলদের জানিয়েছি। অভ্যন্তরীণ ফোরামের পাশাপাশি আকারে–ইঙ্গিতে প্রকাশ্যেও আমি আমার ভিন্নমত প্রকাশ করে এসেছি।’

মজিবুর লিখেছেন, ‘আমি যেহেতু সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কাজ করি এবং প্রকৃতিগত কারণে আমাকে নানা ধরনের আড্ডা, ঘরোয়া আলোচনা, সেমিনারে অংশ নিতে হয়, সেহেতু বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তন-পরিবর্তন প্রসঙ্গে আমি অনেক জায়গায় খোলামেলা মত প্রকাশ করে থাকি। এসব আলোচনায় প্রসঙ্গক্রমে মিসর, মালয়েশিয়া, তুরস্ক, তিউনিসিয়ার ইসলামি ধারার রাজনীতির উত্থান-পতন ও বাংলাদেশে জামায়াতের রাজনৈতিক সংস্কারের বিষয়গুলো উঠে আসে। জামায়াতে রাজনৈতিক সংস্কারের যৌক্তিকতা, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে ভূমিকা প্রসঙ্গে আমার সুস্পষ্ট মত ছিল যে জামায়াতে প্রয়োজনীয় সংস্কার না হলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমার এরূপ খোলামেলা মত নিয়ে জামায়াতের সম্মানিত নেতৃবৃন্দের মাঝে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।’

১৯৮৮ সালে শিবিরের রাজনীতি এবং ২০০৪ সালে জামায়াতের রাজনীতিতে যোগ দেন মজিবুর। দলের অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয়ে তাঁর মতভিন্নতার কথা জানান মজিবুর।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি হওয়া জামায়াতে নেতাদের ‘শহীদ’ হিসেবে উল্লেখ করে মজিবুর বলেন, ‘শত শত শহীদের রক্ত একদিন কথা বলবে।’

আরও পড়তে পারেন

+ There are no comments

Add yours