বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, ‘উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমাদেরই রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে যে, এই নির্বাচনে জননেত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার আবারো রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে যেন আসে। সেই লক্ষ্যে আমাদের ৩টি কাজ করার প্রয়োজন। প্রথমত, সেবামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের পাশে দাঁড়াবার কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। দ্বিতীয়ত, অনৈতিক ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ বন্ধ করতে হবে। তৃতীয়ত, সর্বোপরি নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ এবং গ্রুপিং বন্ধ করতে হবে’।
সম্প্রতি শ্যামপুর থানার সামনে বালুর মাঠ রাস্তায় শ্যামপুর-কদমতলী থানার অন্তর্গত ৪৭, ৫১, ৫২, ৫৩, ৫৪, ৬০ ও ৬১ নং ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ ফজলে শামস্ পরশ আরও বলেন, ‘রাজনীতিতে পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। আমাদের এই সময় পরিশ্রমী কর্মীবাহিনী একান্ত প্রয়োজন। ঘুমাইয়া ঘুমাইয়া পদসর্বস্ব রাজনীতির দিন শেষ। এখন জেগে উঠার সময়’।
‘আমাদের আজকের প্রজন্মের নেতাকর্মী দরকার যারা স্বপ্রণোদিতভাবে সক্রিয় থেকে নতুন ভোরের আলো ছড়াবে, নবসম্ভাবনা জাগ্রত করবে, নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে। জনবিচ্ছিন্ন এবং নিষ্প্রভ কর্মীবাহিনী আমাদের কাম্য না। আমাদের কাম্য সেই নেতৃত্ব যারা নদীর মোহনা থেকে সাগর ডেকে এনে জনসমুদ্রতে রূপান্তরিত করবে। নেতৃত্বের গুণাবলিসম্পন্ন তৃণমূল নেতৃত্ব আমাদের আজকের প্রত্যাশা। এই ওয়ার্ড সম্মেলনের মাধ্যমে আপনারা সেই নেতৃত্ব সৃষ্টি করবেন যাদের ডাকে জনসমুদ্র সৃষ্টি হবে, যে পর্বতসম বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে পাহাড় চূড়ায় উঠার জন্য প্রস্তুত থাকবে।’
‘নেতৃত্বের সেই ভিত্তি আপনাদেরই সৃষ্টি করতে হবে আজকের এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি কঠোর পরিশ্রম করে রাজনীতি করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে হওয়া সত্ত্বেও একজন কর্মী হয়ে হেঁটে রাজনীতি করেছেন। কোনোরকম জাক-জমক বা জৌলুশ ছিল না তার আচার-আচরণ, চাল-চলনে। অতি সাধারণ জীবন যাপন করেছেন; পোশাক-আসাক, বেশ-বাস, চাল-চলনেও ছিল অতি সাধারণ এবং সাধারণ মানুষের কাতারে মিশেই তিনি রাজনীতি করেছেন’।
তিনি আরও বলেন, ‘তারা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে এমন একটা সময় যখন এদেশের মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ হয়ে, এদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়াচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে এমন একটা সময় যখন বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ নির্মূল করে এই অঞ্চলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশের মানুষ এখন আর এসব ধমক ভয় পায় না। বাংলাদেশের মানুষ এখন নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। বাঙালি বীরের জাতি। বাঙালিকে দাবিয়ে রাখা যায় না। বাঙালি জেগে উঠবেই। শত বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করেই বাঙালিকে টিকে থাকতে হয়। সুতরাং এই সকল সাময়িক মানুষ প্রদত্ত প্রতিকূলতা বাঙালি ভয় পায় না। এই সকল নিষেধাজ্ঞা এবং বঞ্চনাও বাঙালি বীরত্বের সাথেই মোকাবিলা করবে’।
এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাড. সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি সৈয়দ আহমেদ। সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের অর্থ সম্পাদক ফিরোজ উদ্দিন আহমেদ সায়মন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক হাজী মুক্তার হোসেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বিএনপি-জামায়াত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র, দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে বিদেশিদের কাছে নালিশ করে যাচ্ছে। কিন্তু কোনো ষড়যন্ত্রই বঙ্গবন্ধুকন্যাকে রুখে দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, আজকে যারা এই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বে আসবেন তারা হবেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক, শেখ হাসিনার আদর্শের কর্মী। কোনো দুষ্কৃতিকারীর জায়গা এই যুবলীগে হবে না। এই অঞ্চলে বঙ্গবন্ধুকন্যা যাকেই নৌকা প্রতীক দিয়ে পাঠাবেন তাকেই বিজয়ী করার জন্য কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে স্বাধীনতাবিরোধী দল, ’৭৫-এর ঘাতক চক্র, দেশের টাকা আত্মসাৎকারীরা ও ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলাকারীরা।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে যত ষড়যন্ত্রই করুক না কেন, তাদের সকল ষড়যন্ত্রের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দিয়ে আবারো বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী করে ঘরে ফিরবে যুবলীগ।
এসময় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মো. হারিছ মিয়া শেখ সাগর, উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের প্রচার সম্পাদক আরমান হক বাবু, দপ্তর সম্পাদক মো. এমদাদুল হক এমদাদ, সহ-সম্পাদক আইয়ুব আলী, সদস্য গোলাম মোস্তফা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব মুস্তাফিজ, উপ-তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এন আই আহমেদ সৈকতসহ কেন্দ্রীয়, মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতৃবৃন্দ।
+ There are no comments
Add yours