নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘদিন পর আবারও নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বের হয়ে ঝটিকা মিছিল করে বিএনপির রাজনৈতিক অঙ্গনে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে একটি ঝটিকা মিছিল বের করেন এবং তার নেতৃত্বও দেন রিজভী আহমেদ। ওই মিছিলটি নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে ফকিরাপুল হয়ে নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারও কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে হাতে গোনা ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী ছিলেন বলে জানা গেছে। এদিকে দলটির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের অনুমতি ছাড়াই মাত্র ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী নিয়ে মিছিল করায় রিজভী আহমেদকে সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। দলটির বিভিন্ন দায়িত্বশীল সূত্রের বরাতে তথ্যের সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
রিজভী আহমেদের এমন ঝটিকা মিছিলের বিষয়টিকে বিএনপির জন্য লজ্জাজনক দাবি করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, এর আগেও রিজভী আহমেদ কাক ডাকা ভোরে মিছিল করে বিএনপিকে বিতর্কিত করেছিলেন। বিএনপি ২০-২৫ জনের দল নয়। আমরা একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। দেশের রাজনীতিতে বিএনপি এখন সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। এছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি, নেতা-কর্মীদের মামলা প্রত্যাহার এবং রাজনৈতিক স্বকীয়তা ফিরে পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ চলছে। তাই আমরা কোনোরকম আন্দোলন, সংগ্রামে যাচ্ছি না। এটি দলীয় সিদ্ধান্ত। এরইমধ্যে রিজভী আহমেদ বিবেকহীনের মতো কাজ করে বসলেন। ক্ষমতাসীন মহল যদি এই মিছিল নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাহলে আমাদের সকল পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে। রাজনীতিতে অতিভক্তির জায়গা নেই। তিনি মিছিলের মাধ্যমে লন্ডনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছেন। রিজভীকে বুঝতে হবে, লন্ডন ও বাংলাদেশের রাজনীতি এক নয়। কমিটিতে জায়গা হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে, চাটুকারিতা করে নয়।
এদিকে বিএনপির সংস্কারপন্থী অংশের একাধিক সূত্র বলছে, রিজভী আহমেদ সচরাচর কার্যালয়ের বাইরে বের হন না। বিশেষ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই তিনি মাঝে মধ্যে ঝটিকা মিছিল করে একটি মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। এবারের মিছিলটিও তার ব্যতিক্রম নয়। শোনা যাচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই বিএনপির জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। ধারণা করা হচ্ছে, সেই কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নেয়ার জন্যই রিজভী আহমেদ তার সঙ্গীদের নিয়ে মিছিল করেছেন। দলের বিপর্যয়ে যে ব্যক্তি কোনোদিন রাস্তায় নামেননি, হঠাৎ করে দলের প্রতি তার দরদী হয়ে ওঠা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দের মনে। কারণ রিজভী আহমেদকে সকলেই চতুর এবং সুযোগসন্ধানী নেতা হিসেবেই চেনেন বলেও জানিয়েছে একটি সূত্র। রিজভী আহমেদের বিরুদ্ধে বিভক্তি সৃষ্টি, অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন কমিটির অনুমোদন দেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সেজন্যই রিজভী আহমেদের প্রতিটি পদক্ষেপে ষড়যন্ত্রের গন্ধ খোঁজার চেষ্টা করেন বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
+ There are no comments
Add yours